ভারতের প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষালয় সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

ভারতের প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

ভারতে প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লক্ষ করা যায়। নীচে এগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করা হল一


(১) ক্লেশ: ক্রেশ হল প্রাথমিক শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে মূলত শিশুপালনের দিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। যে সমস্ত শিশুর পিতা-মাতা, বিশেষ করে মা শিশুর পরিচর্যায় সময় দিতে পারেন না বা বাড়িতে তেমন কোনাে লােকজন থাকে না, তাদের যত্ন নেওয়ার জন্যই এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।


(২) নার্সারি বিদ্যালয়: যে সমস্ত শিশুর বাবা-মা দুজনেই‌ চাকরি বা বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত, তাঁরা তাঁদের সন্তানদের দৈহিক ও মানসিক চাহিদাপূরণ করার সময় পান না। সেইসব সন্তানের চাহিদাপূরণের জন্য, তাদের প্রতি বিশেষ লক্ষ রাখার জন্য মার্গারেট ম্যাকমিলান ও র্যাচেল ম্যাকমিলান নামে দুই বােন লন্ডনে প্রথম নার্সারি বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে আমাদের দেশেও এই ধরনের বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। এই বিদ্যালয়ে গৃহপরিবেশের মতাে পরিবেশ গড়ে তােলা হয়। খেলাধুলাে, ছবি আঁকা, গল্প বলা, নাচ-গান, মাটির কাজ, হাতের কাজ, কাগজের কাজ প্রভৃতির মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা দেওয়া হয়। কোনােপ্রকার পাঠ্যপুস্তকের ব্যবস্থা এখানে থাকে না।


(৩) কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়: ফ্রয়েবেল সর্বপ্রথম এই ধরনের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। এই ধরনের বিদ্যালয়ে উপহার এবং বৃত্তি—এই দুই প্রকার উপকরণের সাহায্যে শিশুদের শিক্ষাদান করা হয়। ফ্রয়েবেল এই বিদ্যালয়ে কুড়িটি উপহার ব্যবহার করেছিলেন। নানান রঙের ও আকৃতির কাঠের বা অন্যান্য জিনিসের দ্বারা তৈরি এক-একটি সেটকে উপহার বলা হয়। আর বৃত্তি বলতে বোঝায় বালি, কার্ডবাের্ড, মাটি প্রভৃতি দিয়ে তৈরি নানান বস্তু। এই বিদ্যালয়ে লেখা, পড়া, গণনা করা, ছবি আঁকা, অভিনয় করা, গান গাওয়া প্রভৃতির ব্যবস্থাও করা হয়।


(৪) মন্তেসরি বিদ্যালয়: মাদাম মারিয়া মন্তেসরি এই ধরনের‌ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাত্রী। তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই ধরনের বিদ্যালয়ের নাম 'কাসা দাই বামবিনি। এর অর্থ হল শিশু নিকেতন। এই বিদ্যালয়ে যে যান্ত্রিক কৌশলের দ্বারা শিক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় তার নাম ‘ডাইড্যাকটিক অ্যাপারেটার্স'। এই বিদ্যালয়ে শিশুদের ইন্দ্রিয় পরিমার্জনের জন্য প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, বাগান তৈরি, হাতের কাজ, সংগীত প্রভৃতির আয়ােজন করা হয়।


(৫) প্রাকবুনিয়াদি বিদ্যালয়: মহাত্মা গান্ধির প্রবর্তিত শিক্ষাদর্শের ভিত্তিতে প্রাকবুনিয়াদি বিদ্যালয় গড়ে তােলা হয়। এখানে পড়াশােনার পাশাপাশি শিশুদের আত্মবিশ্বাস গড়ে তােলা এবং নিয়মানুবর্তিতার বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।


(৬) বাল শিক্ষামন্দির: এই বিদ্যালয় বুনিয়াদি এবং মন্তেসরি বিদ্যালয়ের অনুকরণে গড়ে তােলা হয়। এর পাঠক্রমের মধ্যে বুনিয়াদি এবং মন্তেসরি শিক্ষার সংমিশ্রণ ঘটানাে হয়।


(৭) অঙ্গনওয়াড়ি: সরকার নিয়ন্ত্রিত অঙ্গনওয়াড়ির মাধ্যমেও প্রাক্‌প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা আছে।


আমাদের দেশে প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষা সরকার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে, যাদের মাধ্যমে এই শিক্ষা শিশুদের দেওয়া হচ্ছে।


মাধ্যমিক শিক্ষার ত্রূটি কী কী? ওই ত্রূটিগুলি দূর করার জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?


উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার সমস্যা ও তার সমাধান সম্পর্কে লেখাে।


প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যগুলি কী কী? এই লক্ষ্যগুলি কীভাবে পূরণ করা যায়?


শিশুর সুষম বিকাশে প্রাথমিক শিক্ষার ভূমিকা কী?


প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার সমস্যা ও সমাধান সম্পর্কে আলােচনা করাে।


বাল্যকালে শিশুরা সাধারণত কোন্ শিক্ষাস্তরের পাঠগ্রহণ করে? এই প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ও পাঠক্রম আলােচনা করাে।


মনােবিদ পিকুনাস জীবনবিকাশের স্তরকে কীভাবে ভাগ করেছেন তা লেখাে।