অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্র

অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্র


আধুনিক কালের অধিকাংশ রাষ্ট্রই হল বিশাল আয়তনবিশিষ্ট ও জনবহুল। প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র এখানে অচল। স্বভাবতই সাম্প্রতিক কালের গণতন্ত্র বলতে প্রতিনিধিত্বমূলক পরোক্ষ গণতন্ত্রকেই বোঝায়। কিন্তু প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ক্রমান্বয়ে এক ধরনের ব্যবধানের সৃষ্টি হয়। এই ব্যবধান নাগরিক ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে দূরত্ব ধীরে ধীরে বাড়িয়ে দেয়। এখনকার প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার এই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করার জন্যই অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের সুপারিশ করা হয়। ডেভিড হেল্ড অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রকে অংশগ্রহণ, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র (Participation, Liberty and Democracy) এই নামে আখ্যায়িত করেছেন।


বস্তুতঃ উন্নয়নমূলক গণতন্ত্রের অনুষঙ্গেই অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের ধারণার সূত্রপাত ঘটেছে। উন্নয়নমূলক গণতন্ত্রের প্রবক্তারা যেমন রুশো বা জন স্টুয়ার্ট মিল একই সঙ্গে ব্যাপক অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের কথা বলেছেন। অ্যান্ড্রু হেউড তাঁর Politics শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে বলেছেন: “Rousseau's theories have helped to shape the modern idea of participatory democracy taken up by New Left thinkers in 1960s and 1970s." এই ধারণা আরও জোরদার হয় বিংশ শতকের ষাট ও সত্তরের দশকে। মিল যেমন একমাত্র শিক্ষিত ব্যক্তিদেরই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের পক্ষে মত দেন, এর বিপরীতে সাম্প্রতিক গণতন্ত্রবাদীরা, বিশেষ করে নিউ লেফট গোষ্ঠী বা উত্তর-মার্কসবাদীরা অবাধ গণ অংশগ্রহণের পক্ষে মতামত দেন। কারণ তাঁদের মতে সরকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক নাগরিকের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। কারণ এই সমস্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গেই তার জীবনের ভালমন্দ সবকিছু জড়িয়ে খোলামেলা, অবাধ এবং দায়বদ্ধ সরকার গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে তাঁরা বিকেন্দ্রীকৃত গণতন্ত্রের দাবী জানান। সমাজ ও রাজনৈতিক জীবনের সব স্তরেই, পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে, আঞ্চলিক জনজীবনে, রাজনৈতিক দলে, স্বার্থ গোষ্ঠীর মধ্যে, আইনসভায় সর্বত্র-বিকেন্দ্রীকৃত অবাধ গণ অংশগ্রহণকারী পরিবেশের পক্ষে তাঁরা। সাম্প্রতিক তৃণমূলস্তরে গণতন্ত্র গড়ে তোলার কর্মসূচী এই ধরনের গণতন্ত্রেরই মডেলকে অনুসরণ করে। রুশোর প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের ধারণা থেকেই এর বিকাশ।


গণতন্ত্র সম্পর্কে বিভিন্ন মডেলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র। প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রকে আরো বেশী করে কার্যকরী করার উদ্দেশ্যে এই মডেলের ওপর অনেকে জোর দেন। এখানে সবচেয়ে বেশী জোর দেওয়া হয় দায়িত্বশীল ও সক্রিয় নাগরিক সমাজ এবং রাজনীতি ও প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় গণ অংশগ্রহণের ওপর। অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের প্রবক্তাদের অভিমত অনুযায়ী কেবলমাত্র অংশগ্রহণকারী সমাজেই প্রত্যেক নাগরিককে আত্মবিকাশের ব্যাপারে অভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদান সম্ভব হয়। অংশগ্রহণকারী সমাজে একটি জাগ্রত নাগরিক সমাজ থাকবে। এই নাগরিক সমাজ তথ্যজ্ঞানসম্পন্ন। এই নাগরিক সমাজের কাজ হবে রাষ্ট্রীয় স্তরে ত’ বটেই, সামাজিক স্তরে, কর্মক্ষেত্রে–সংক্ষেপে সর্ব ক্ষেত্রেই পরিচালন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করা ও নিয়ন্ত্রণ কায়েম করা।


তথ্যজ্ঞানসম্পন্ন জাগ্রত নাগরিক সমাজ গড়ে তেলার জন্য কতকগুলি কর্মসূচীর কথা বলা হয়। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ সকলকে জানাতে হবে। তা হলে তথ্যজ্ঞানসম্পন্ন একটি জাগ্রত নাগরিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। একটি উন্মুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা প্রচলন করতে হবে। তা হলে প্রথাগত রাজনীতিক ক্রিয়াকর্মের বাইরে অংশগ্রহণমূলক বিবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা পরিচালনা করা যাবে। রাজনীতিক দলের নেতাদের দলের কর্মীদের কাছে দায়িত্বশীল থাকতে বাধ্য করতে হবে। তার জন্য উদারনীতিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় বিদ্যমান রাজনীতিক দলব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস করতে হবে। জনসাধারণের জীবনধারায় এবং ব্যক্তিগত জীবনে আমলাতান্ত্রিক প্রভাব-প্রতিপত্তির অবসানের ব্যাপারে সাধ্যমত উদ্যোগ আয়োজন গ্রহণ করতে হবে। সম্পদের পুনর্বণ্টনের মাধ্যমে আর্থনীতিক ক্ষেত্রে দুর্বল সামাজিক গোষ্ঠীসমূহের আর্থিক অবস্থার উন্নতি সাধনের ব্যবস্থা করতে হবে।


অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের তত্ত্বের ধারণা গড়ে উঠেছে একই সঙ্গে উদারনীতিবাদ এবং মার্কসবাদের ওপর ভিত্তি করে। বস্তুতঃ “উদারনীতিবাদ বনাম মার্কসবাদ” এই দ্বি-বিভাজন বা বৈপরীত্যের বাইরে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের মডেল আত্মপ্রকাশ করে। এর মধ্যে একদিকে যেমন লক বা রুশোর ধারণা নিহিত, অন্যদিকে সাম্প্রতিক সমাজতান্ত্রিক বহুত্ববাদের দাবীও এর সঙ্গে সংযোজিত।


ডেভিড হেল্ড এই প্রসঙ্গে সি. বি. ম্যাকফারসন (C. B. Macpherson), নিকো পোলান্টজাস (Nicos Poulantzas) এবং প্যাটম্যানের (Carole Pateman) সাম্প্রতিক তাত্ত্বিক অবস্থানের কথা বলেছেন। এঁরা তিনজনই মাকর্সবাদ-উদারনীতিবাদে দীর্ঘলালিত বিভাজনকে এড়িয়ে তৃতীয় অন্য আরেক তাত্ত্বিক অবস্থান থেকে গণতন্ত্রকে আরও বেশী বিচিত্রগামী এবং গণভিত্তিক করার চেষ্টা করছেন।


ম্যাকফারসন: ম্যাকফারসন অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্র প্রসঙ্গে মিলের ধারণার অনুগামী। তাঁর মতে পশ্চিমী উদারনীতিবাদী তত্ত্বের প্রধান ধারায় ব্যক্তিকে দেখা হয়েছে মূলতঃ একজন ভোক্তা হিসেবে। এখানে প্রত্যেক ব্যক্তি স্বার্থসচেতনতার সঙ্গে নিজ যোগ্যতা এবং সম্ভাবনার প্রকাশ ঘটায়। নিজ যোগ্যতা প্রমাণের মধ্য দিয়ে আহরিত সম্পত্তির স্বত্বাধিকার সেই ব্যক্তির একান্ত নিজস্ব যা বাজারে বিক্রয়যোগ্য। প্রত্যেক ব্যক্তি যেহেতু এই সুযোগ পায় তাই সারা সমাজব্যাপী গড়ে ওঠে বাজারী সম্পর্ক। ম্যাকফারসন এই ধারণার সমালোচনা করছেন এই বলে যে এর ফলে একধরনের সংকীর্ণ ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ গড়ে ওঠে, এবং তারফলে অংশগ্রহণের মাত্রা অনেক কমে যায়। আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপ্রণোদিত ব্যক্তিস্বাতন্ত্রের বদলে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন সামাজিক সহযোগিতার পরিবেশ, প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের উদ্দেশ্য হল প্রশাসকদের দায়বদ্ধতা বাড়ানো। মিল ব্যক্তিবাদী ছিলেন। কিন্তু তিনি ব্যক্তি-মানুষের বিকাশ সাধনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক পরিচালন ব্যবস্থায় নাগরিকদের সরাসরি ও অবিরাম অংশগ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন। ব্যক্তি মানুষের আত্মবিকাশ এবং অংশগ্রহণকারী গণতন্ত্রের স্বার্থে ম্যাকফারসন কতকগুলি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন। এ বিষয়গুলি হল প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক নীতি ও পদ্ধতি মোতাবেক রাজনীতিক দলসমূহের পুনর্বিন্যাসকরণ; অংশগ্রহণমূলক রাজনীতিক দলসমূহের যথাযথভাবে পার্লামেন্টে দায়িত্ব পালন; সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক দলগুলির কার্যকলাপের স্বশাসিত ক্ষেত্র; এবং স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের দ্বারা সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক দলগুলির নিয়ন্ত্রণ।


পোলান্টজাস: পোলান্টজাস রাষ্ট্রের অধিকতর গণতন্ত্রিকরণের কথা বলেন। বৃহদায়তন বিশিষ্ট রাষ্ট্রের অস্তিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের বিস্তারের কথা বলেন। এখানে স্থানীয় উদ্যোগ, অংশগ্রহণ ইত্যাদির ফলে রাষ্ট্র এবং তার নানা প্রতিষ্ঠানের দায়বদ্ধতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। পোলান্টজাস রাষ্ট্র ব্যবস্থার পাশাপাশি বহুত্ববাদী সামাজিক বৈশিষ্ট্যের কথা বলেছেন।


পোলান্টজাস তার মার্কবাদী দার্শনিক অবস্থানকে একেবারে বাতিল করে দেন নি। কিন্তু তিনি মার্কসীয় ধ্যান-ধারণার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেছেন উদারনীতিক গণতান্ত্রিক কিছু উপাদানকে। তিনি মার্কসীয় সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণার সঙ্গে সর্বজনীন অবাধ নির্বাচন ব্যবস্থাকে এবং বাক্য ও মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমসমূহের স্বাধীনতাকে সংযুক্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, তা না করলে যে ব্যবস্থার সৃষ্টি হবে, তা হবে যান্ত্রিক প্রকৃতির। এ রকম তাত্ত্বিক অবস্থানের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট মার্কসবাদী দার্শনিক রোজা লুক্সেমবার্গের সঙ্গে পোলান্টজাসের ধারণাগত সাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়।


প্যাটম্যান: প্যাটম্যান অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রসঙ্গে প্রচলিত উদারনৈতিক ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে অবাধ ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্যভিত্তিক গণতন্ত্র বাস্তবে অনুপস্থিত; কারণ সমাজ জীবনের সর্বস্তরে শ্রেণী, লিঙ্গ এবং জাতি বৈষম্য বজায় রয়েছে। তাই আনুষ্ঠানিকভাবে সম অধিকারের কথা ঘোষিত হলেও বাস্তবে তার রূপায়ণ ঘটে না। তাই তিনি মনে করেন বিভিন্ন জনগোষ্ঠির যথাযথ অংশগ্রহণ সম্ভব হবে তখনই যখন গণতন্ত্রের বিকেন্দ্রীকরণ ঘটবে এবং স্থানীয় মানুষজন স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে নিজেদের দায়িত্ব নিজেরাই পালন করবে। অর্থাৎ প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলি যেমন একাধিক রাজনৈতিক দল, জনপ্রতিনিধি এবং নিয়মিত নির্বাচন ব্যবস্থা প্রভৃতির পাশাপাশি স্থানীয় স্বায়ত্ত ব্যবস্থায় প্রত্যক্ষ গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের ব্যবস্থাও করা উচিত। এইভাবে স্থানীয় ও জাতীয় এই দুটি স্তরের মধ্যেই গড়ে ওঠে এক সজীব, সক্রিয়, নমনীয় পারস্পরিক সম্পর্ক।


প্যাটম্যানের মতানুসারে রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজের মধ্যে র‍্যাডিক্যাল পরিবর্তন সাধন প্রয়োজন। রাষ্ট্রীয় বিষয়াদিতে জনসাধারণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা দরকার। এই আলোচনায় প্যাটম্যান উদারনীতিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থার বিরূপ সমালোচনা করেছেন। এই রাজনীতিক ব্যবস্থায় সর্বজনীন স্বাধীনতার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয় এবং ক্ষমতা বণ্টনের অসমতার অবসানের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। বাস্তবে কিন্তু স্বাধীনতা ক্ষমতাহীনদের কাছে নিছক একটি আইনমূলক অধিকার হিসাবেই প্রতিপন্ন হয়। প্যাটম্যানের অভিমত অনুযায়ী রাষ্ট্রকে কোনভাবেই নিরপেক্ষ সংগঠন হিসাবে গণ্য করা যায় না। কিন্তু উদারনীতিবাদীরা রাষ্ট্রের কাছেই ন্যায়বিচারের প্রত্যাশী। তাঁর মতে রাষ্ট্র স্থিতাবস্থা সংরক্ষণে সক্রিয় থাকে। স্বভাবতই রাষ্ট্র ক্ষমতার অসম বণ্টনকে অব্যাহত রাখতেই ভূমিকা পালন করে। অথচ উদারনীতিবাদীরা সমাজের কাছে রাষ্ট্রকে দায়বদ্ধ করেন নি; তার পরিবর্তে তাঁরা রাষ্ট্রকে মধ্যস্থতাকারীর বা বিচারকের ভূমিকা দিয়েছেন। নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণ সম্পর্কিত উদারনীতিবাদীদের তাত্ত্বিক অবস্থানকে প্যাটম্যান স্বীকার বা সমর্থন করেন নি।


বস্তুতঃ র‍্যাডিক্যাল অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের ধারণার উৎস রুশো। বিংশ শতাব্দীর 60 এবং 70 এর দশকে এই ধারাকে উপজীব্য করেই নিউ লেফট গোষ্ঠির তাত্ত্বিকেরা তৃণমূলস্তরে গণতন্ত্র বিস্তারের ধারণা গড়ে তোলেন। নাগরিক, রাজনৈতিক সমাজের সমস্ত স্তরে এবং প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট জনগণের অংশগ্রহণকে সুনিশ্চিত করতে এই ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দাবী তাঁরা তোলেন। এর মূল লক্ষ্য জনগণ প্রাত্যহিক জীবনে নিজেরাই নিজেদের জীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে, তাদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত যাবতীয় বিষয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত তারা নিজেরাই নেবে। তবে ডেভিড হেল্ডের প্রশ্ন, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের যে মূল দাবী— প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে গণ অংশগ্রহণকে সুনিশ্চিত করা— তার বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব? উপরন্তু সাম্প্রতিককালে দ্রুত পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার বিস্তার ইত্যাদির পরিপ্রেক্ষিতে এই সমস্ত দাবীর রূপায়ণের সমস্যাগুলিও বিচার বিবেচনা করা দরকার।