জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়া: সংবেদন, প্রত্যক্ষণ এবং ধারণা (Short Q&A)
ইন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ কাকে বলে?
ইন্দ্রিয় প্রশিক্ষণের অর্থ হল ইন্দ্রিয়ের তীক্ষ্তা ও কার্যকারিতা বাড়ানাে। ইন্দ্রিয় হল জ্ঞানের প্রবেশপথ এবং সংবেদন হল প্রাথমিক অভিজ্ঞতা যা প্রাণীরা ইন্দ্রিয়ের দ্বারা পরিবেশ থেকে অর্জন করে। তাই অনুশীলনের মাধ্যমে বিভিন্ন ইন্দ্রিয়কে সক্রিয় রেখে বিষয়বস্তুকে জানা হল ইন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ
জ্ঞানেন্দ্রিয় কাকে বলে?
গ্রাহক কোশযুক্ত যেসব ইন্দ্রিয় পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে, তাদের বলে জ্ঞানেন্দ্রিয়।
জ্ঞানেন্দ্রিয় হিসেবে ত্বকের দুটি কাজ উল্লেখ করাে।
জ্ঞানেন্দ্রিয় হিসেবে ত্বকের দুটি কাজ হল— স্পর্শ অনুভবে সাহায্য করা এবং চাপ, তাপ, ব্যথা ইত্যাদি অনুভবে সাহায্য করা।
স্বাদকোরক কাকে বলে?
জিহ্বার উপরিতলে অবস্থিত বিভিন্ন প্রকার স্বাদের গ্রাহক কোশগুলিকে স্বাদকোরক বলে।
সংবেদন বলতে কী বােঝ?
যেসব বিচ্ছিন্ন এবং নিরপেক্ষ স্নায়বিক অভিজ্ঞতা তাদের সমন্বয়ের মাধ্যমে আমাদের দেহে একক বস্তুধর্মী অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করে, তাকে বলে সংবেদন।
উদ্দীপক কাকে বলে?
যা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে তাকেই উদ্দীপক বলে।
দুটি বাহ্যিক এবং দুটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের উদাহরণ দাও।
দুটি বাহ্যিক উদ্দীপক হল—আলাে এবং তাপ। দুটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক হল— চাপ এবং হরমােনের ক্রিয়া।
গ্রাহক বা রিসেপটর কাকে বলে?
প্রাণীদেহে সংজ্ঞাবহ স্নায়ুতন্তুর প্রান্তে অবস্থিত যে অংশ পরিবেশের নির্দিষ্ট পরিবর্তনে সক্রিয় হয়ে সংজ্ঞাবহ স্নায়ুতন্তুতে স্পন্দন সৃষ্টি করে, তাকে গ্রাহক বা রিসেপটর বলে।
কারক বা প্রতিবেদন অঙ্গ বা ইফেক্টর কাকে বলে?
স্নায়ুস্পন্দন দ্বারা উদ্দীপ্ত হয়ে প্রাণীদেহের যেসব অঙ্গ সাড়া দেয়, তাদের কারক বা প্রতিবেদন অঙ্গ বা ইফেক্টর বলে। বিভিন্ন গ্রন্থি ও পেশি হল প্রতিবেদন অঙ্গ।
বাহক বা কনডাক্টর কাকে বলে?
প্রাণীদেহে যাদের মাধ্যমে গ্রাহক বা রিসেপটর থেকে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পোঁছােয় এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সাড়া প্রতিবেদন অঙ্গে পৌঁছােয়, তাদের বাহক বা কনডাক্টর বলে। যেমন—স্নায়ুকোশ এবং স্নায়ু।
সংবেদনের উপাদানগুলি কী কী?
সংবেদনের উপাদানগুলি হল— উদ্দীপক, @ স্নায়ুতন্ত্র এবং চেতনা।
উত্তেজিত কাকে বলে?
উদ্দীপকের উপস্থিতিতে জীবদেহের সাড়া দেওয়ার অবস্থাকে উত্তেজিত বলে।
সংবেদন কত প্রকারের এবং কী কী?
সংবেদন তিন প্রকারের— দেহজ সংবেদন, ইন্দ্রিয়জ সংবেদন, পেশিসঞ্চালনগত সংবেদন৷
সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।
সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য— সংবেদন হল উদ্দীপকনির্ভর প্রক্রিয়া। সংবেদন প্রকৃতপক্ষে কোনাে জ্ঞান নয়, এটি বস্তুকেন্দ্রিক মানসিক অবস্থা।
মনােবিজ্ঞানী টিচেনারের মতে সংবেদন কী?
মনােবিদ টিচেনারের মতে, সংবেদন হল গুণ, তীব্রতা, স্পষ্টতা এবং স্থিতি—এই চারটি ধর্মের দ্বারা গঠিত মৌলিক মানসিক প্রক্রিয়া।
গুণ কাকে বলে?
সংবেদনের একটি ধর্ম হল গুণ। যেমন—স্বাদজ সংবেদনের একটি গুণ হল মিষ্টত্ব, স্পর্শজ সংবেদনের একটি গুণ হল উষ্ণতা।
গুণের দিক দিয়ে সংবেদনকে ক-ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?
গুণের দিক দিয়ে সংবেদনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়— জাতিগত সংবেদন এবং উপজাতিগত সংবেদন।
সাড়া বা রেসপন্স কাকে বলে?
উদ্দীপক জীবদেহে যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে তাকে সাড়া বা রেসপন্স বলে।
তীব্রতা কাকে বলে? সংবেদনের তীব্রতা কীসের ওপর নির্ভর করে?
সংবেদনের পরিমাণ হল তীব্রতা। সংবেদনের তীব্রতা উদ্দীপকের শক্তির ওপর নির্ভর করে।
সংবেদনের চারটি ধর্ম বা লক্ষণ উল্লেখ করাে।
সংবেদনের চারটি ধর্ম বা লক্ষপ হল- তীব্রতা, স্থিতিকাল, ব্যাপ্তি এবং স্থানগত বৈশিষ্ট্য।
সংবেদনের ব্যাপ্তি ও স্থিতিকাল বলতে কী বােঝ?
সংবেদন কতখানি স্থান জুড়ে রয়েছে তাকেই সংবেদনের ব্যাপ্তি বলে। সংবেদন কত সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছে তাকে বলে ওই সংবেদনের স্থিতিকাল বা স্থায়িত্ব।
দৈহিক বা দেহজ সংবেদনের উপাদানগুলি কী কী?
দৈহিক বা দেহজ সংবেদনের উপাদানগুলি হল—হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী, যকৃৎ প্রভৃতি।
পেশি সংবেদনের উপাদানগুলি কী কী?
পেশি সংবেদনের উপাদানগুলি হল—পেশির সংকোচন প্রসারণ, অস্থিসন্ধি এবং টেনডন।
ইন্দ্রিয় সংবেদনের উপাদানগুলি কী কী?
ইন্দ্রিয় সংবেদনের উপাদানগুলি হল—চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা, ত্বক।
দেহজ সংবেদন কাকে বলে?
দেহের অভ্যন্তরে কোনাে পরিবর্তন ঘটলে যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়, সেই উদ্দীপনা অন্তর্বাহী স্নায়ুপথে পরিচালিত হয়ে মস্তিকে পৌঁছেলে যে বিশেষ ধরনের সংবেদন সৃষ্টি হয় তাকে দেহজ সংবেদন বলে। যেমন—ক্ষুধা, তৃয়া ইত্যাদি।
দৈহিক সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।
দৈহিক সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল- এটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকপ্রসূত জটিল প্রকৃতির সংবেদন। এই সংবেদনের মাধ্যমে দেহের ঘাটতি এবং চাহিদা বােঝা যায়।
পেশি সংবেদন কাকে বলে?
মানবদেহের বিভিন্ন পেশির সংকোচন ও প্রসারণের ফলে যে সংবেদনের সৃষ্টি হয় তাকে পেশি সংবেদন বলে।
পেশি সংবেদনকে বিশ্লেষণ করলে ক-টি দিকের সন্ধান পাওয়া যায় ও কী কী?
পেশি সংবেদনকে বিশ্লেষণ করলে তিনটি দিকের সন্ধান পাওয়া যায়। সেগুলি হল— শকি প্রয়ােগঘটিত সংবেদন, চেষ্টীয় সংবেদন এবং পার্শ্বীয় সংবেদন।
শক্তি প্রয়ােগঘটিত সংবেদন কাকে বলে?
কোনাে কাজ করার সময় বাহ্যিক বস্তুর ওপর শক্তি প্রয়ােগের ফলে যে বিশেষ ধরনের সংবেদন সৃষ্টি হয়। তাকে শক্তি প্রয়ােগঘটিত সংবেদন বলে। যেমন, কোনাে হালকা জিনিসের থেকে কোনাে ভারী জিনিস তুলতে যে বেশি শক্তির প্রয়ােজন হয় তা হল শক্তি প্রয়ােগঘটিত সংবেদন।
চেষ্টীয় সংবেদন কাকে বলে?
মানবদেহে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা পেশি চালনা করার জন্য যে বিশেষ প্রকার সংবেদন সৃষ্টি হয়, তাকে চেষ্টীয় সংবেদন বলে। যেমন, হাত বা পা নাড়ানাের জন্য যে সংবেদন সৃষ্টি হয় তা চেষ্টীয় সংবেদন।
পার্শ্বীয় সংবেদন কাকে বলে?
বহির্জগতে কোনাে পরিবর্তন আনার জন্য মানুষ যখন কাজ করে তখন তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সক্রিয় হয় এবং তার ফলে যে বিশেষ প্রকার সংবেদন সৃষ্টি হয়, এই বিষয়কেই পার্শ্বীয় সংবেদন বলা হয়।
ইন্দ্রিয় সংবেদন কাকে বলে?
পঞ্চেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যে সংবেদন সৃষ্টি হয় তাকে ইন্দ্রিয় সংবেদন বলে।
রেটিনা কোথায় অবস্থিত? এতে কী জাতীয় প্রতিবিম্ব গঠিত হয়?
রেটিনা চোখে অবস্থিত। রেটিনায় বস্তুর উলটো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।
রেটিনার কোন্ অংশ থেকে আলােক অনুভূতি কোন্ স্নায়ুর মাধ্যমে গুরুমস্তিষ্কের দর্শনকেন্দ্রে পৌঁছােয়?
রেটিনার 'রড কোশ এবং কোন কোষ থেকে আলােক অনুভূতি অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে গুরুমস্তিষ্কের দর্শনকেন্দ্রে পৌঁছােয়।
মানব কর্ণের অস্থি তিনটির নাম কী?
মানব কর্ণে অবস্থিত অস্থি তিনটি হল- মেলিয়াস, ইনকাস এবং ও স্টেপিস।
অক্ষিপট বা রেটিনার কাজ কী?
চোখের রেটিনা বস্তুর প্রতিবিম্ব গঠনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে। রেটিনার 'রড কোশ' মৃদু আলাে শােষণে এবং 'কোপ কোশ’ উজ্জ্বল আলাে ও রং শােষণে অংশ নেয়।
জিহ্বায় কীভাবে স্বাদ গৃহীত হয়?
জিহ্বার উপরিভাগে অবস্থিত স্বাদকোরকগুলি কোনাে খাদ্যবস্তুর সংস্পর্শে এলে উদ্দীপিত হয়। এই স্বাদ উদ্দীপনা স্নায়ুর মাধ্যমে স্বাদকেন্দ্রে পৌঁছেলে আমরা খাদ্যবস্তুর স্বাদ অনুভব করতে পারি।
সংবেদন অঙ্গ হিসেবে জিহ্বার কাজ লেখাে।
সংবেদন অঙ্গ হিসেবে জিহ্বার কাজ হল- স্বাদ গ্রহণ করা এবং কথা বলতে সাহায্য করা।
সংবেদন অঙ্গ হিসেবে ত্বকের কাজ কী?
সংবেদন অঙ্গ হিসেবে ত্বকের কাজ হল— মুখ্যত স্পর্শ অনুভবে সাহায্য করা এবং গরম, ঠান্ডা, ব্যথা ইত্যাদি অনুভবে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করা।
পেশি সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে|
পেশি সংবেদনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল— পেশি সংবেদনের গুণ নির্ভর করে কতজোড়া পেশি কাজে লাগানাে হচ্ছে তার ওপর। পেশি সংবেদনের তীব্রতা নির্ভর করে পেশিগুলিকে সঞ্চালিত করার জন্য কী পরিমাণ শক্তি ব্যয় হচ্ছে তার অনুভূতির ওপর।
অপটিক নার্ভ কোথায় অবস্থিত?
অপটিক নার্ভ চক্ষুর অভ্যন্তরীণ গঠনে রেটিনার অন্ধবিন্দু থেকে মস্তিষ্কের দর্শন অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।
জ্ঞানেন্দ্রিয় অনুযায়ী সংবেদনকে কীভাবে ভাগ করা যায়?
জ্ঞানেন্দ্রিয়ের প্রেক্ষিতে সংবেদনকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন—দর্শন সংবেদন, শ্রবণ সংবেদন, ঘ্রাণ সংবেদন, স্বাদ সংবেদন এবং ত্বক সংবেদন।
জিহ্বায় কী কী স্বাদগ্রাহক আছে?
জিহবার অগ্রভাগে অর্থাৎ সামনের দিকে মিষ্টি, মাঝে লবনাক্ত, গােড়ার দিকে তেতাে এবং দুপাশে অম্ল বা টক স্বাদগ্রাহক আছে।
দূরত্ব প্রত্যক্ষণে উপযােজন কাকে বলে?
চক্ষুলেন্সের ফোকাস দূরত্বের পরিবর্তন ঘটিয়ে বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত বস্তুর প্রতিবিম্বকে রেটিনায় গঠন করার ক্ষমতাকে উপযােজন বলা হয়।
প্রত্যক্ষণ কাকে বলে?
অর্থপূর্ণ সংবেদনকে প্রত্যক্ষ বলে। সংবেদনকে যখন ব্যাখ্যা করা হয় তখনই তা হয়ে ওঠে প্রত্যক্ষণ।
প্রত্যক্ষণের পাঁচটি স্তরের নাম উল্লেখ করাে।
প্রত্যক্ষণের পাঁচটি স্তর হল— পৃথক্করণ, সদৃশকরণ, অনুষঙ্গ ও পুনরুৎপাদন, স্থানকাল নির্দেশ এবং বিশ্বাস।
প্রত্যক্ষণের দুটি ধর্ম উল্লেখ করাে।
প্রত্যক্ষণের দুটি ধর্ম হল- ব্যাপ্তি এবং স্থায়িত্ব। ব্যাপ্তি ধর্মের সাহায্যে আমরা বস্তুর আকার সম্বন্ধে জানতে পারি এবং স্থায়িত্ব ধর্মের দ্বারা আমরা বস্তুর স্থায়িত্ব জানতে পারি।
প্রত্যক্ষণের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।
প্রত্যক্ষণের দুটি বৈশিষ্ট্য- প্রত্যক্ষণে ব্যক্তিগত পার্থক্য দেখা যায়। প্রত্যক্ষণ একটি মানসিক প্রক্রিয়া।
সংবেদনের সাথে প্রত্যক্ষণের দুটি পার্থক্য উল্লেখ করাে।
সংবেদনের সাথে প্রত্যক্ষণের দুটি পার্থক্য হল- সংবেদন একটি সরল প্রক্রিয়া। কিন্তু প্রত্যক্ষণ অপেক্ষাকৃত জটিল প্রক্রিয়া। সংবেদনে বস্তু সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান তৈরি হয়। প্রত্যক্ষ বস্তু সম্পর্কে ধারণা তৈরি করতে সাহায্য করে।
প্রত্যক্ষণকে ক-টি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় এবং কী কী?
প্রত্যক্ষাকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়—সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষণ, অর্জিত প্রত্যক্ষণ এবং সংপ্রত্যক্ষপ।
সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষণ কাকে বলে?
নির্দিষ্ট সংবেদনের সহায়তায় বস্তুর কোনাে গুণকে নিরূপণ (judgement) করার নাম সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষণ। এই ধরনের প্রত্যক্ষ মৌলিক প্রত্যক্ষণ নামেও পরিচিত। যেমন, সন্দেশের স্বাদ মিষ্টি।
অর্জিত প্রত্যক্ষণ কাকে বলে?
বিশেষ ধরনের সংবেদনের জন্য বিশেষ ইন্দ্রিয় থাকে। যখন কোনাে সংবেদনের জন্য সেই বিশেষ ইন্দ্রিয়ের সাহায্য না পেয়ে অন্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্য পাই, তাকে অর্জিত প্রত্যক্ষপ বলে। দূরত্ব, ঘনত্ব, গতি হল অর্জিত প্রত্যক্ষণের উদাহরণ।
সংপ্রত্যক্ষণ কাকে বলে?
যেসব অভিজ্ঞতা আগে থেকেই মনের মধ্যে সংবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে, সেগুলির সাহায্যে যখন কোনো নতুন ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করা হয়, তখন ওই জাতীয় প্রত্যক্ষপকে সংপ্রত্যক্ষপ বলে যেমন—বাঘ বিড়াল জাতীয় প্রাণী, বীজগণিতের সাহায্যে পাটিগণিতের সমস্যার সমাধান।
ভ্রান্তবীক্ষপ কী?
বস্তুর প্রকৃত রূপ প্রত্যক্ষপ না করে অন্য কোনােরূপ প্রত্যক্ষণ করার নাম ভ্রান্তবীক্ষপ| যেমন, দড়িকে সাপ ভেবে ভুল করা।
অধ্যাস (illusion) কাকে বলে?
বস্তুর প্রকৃত রূপ প্রত্যক্ষপ না করে অন্য কোনােরূপ প্রত্যক্ষণ করার নাম ভ্রান্তবীক্ষপ| যেমন, দড়িকে সাপ ভেবে ভুল করা।
অধ্যাসের দুটি মানসিক কারণ উল্লেখ করাে।
অধ্যাসের দুটি মানসিক কারণ হল— প্রত্যাশা, প্রতীক্ষা এবং পূর্ব ধারণা। ভ্রান্ত ধারণা, সংস্কার, পক্ষপাতিত্ব, অন্ধবিশ্বাস, সন্দেহ প্রভৃতি।
বৃহিঃকারণজাত ভ্রান্তবীক্ষণ কাকে বলে?
যখন বস্তুর বাহ্যিক কোনাে কারণের জন্য ভ্রান্তবীক্ষপ ঘটে, তাকে বহিঃকারপজাত ভ্রান্তবীক্ষপ বলে। যেমন, কোনাে দড়ি যদি কালো হয়, সাপের মতো এঁকেবেঁকে থাকে এবং তাকে সাপ বলে ভ্রম হয় তাহলে তাকে ভ্রান্তবীক্ষণের বহিঃকারণ বলা হবে।
শিক্ষায় প্রত্যক্ষণের গুরুত্ব উল্লেখ করাে (যে-কোনাে দুটি)।
শিক্ষায় প্রত্যক্ষণের দুটি গুরুত্ব হল- প্রত্যক্ষণের মাধ্যমে শিখনীয় বিষয় আরও অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং দক্ষতা শিখনে প্রত্যক্ষ বিশেষভাবে সাহায্য করে।
প্রত্যক্ষণের যে-কোনাে একটি স্তরের উল্লেখ করাে।
প্রত্যক্ষণের প্রথম স্তরের নাম পৃথক্করণ।
মনােবিজ্ঞানী উডওয়ার্থের মতে ধারণা কী?
মনােবিজ্ঞানী উডওয়ার্থের মতে, যে-কোনাে একটি বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে যে সাদৃশ্য বর্তমান সে সম্পর্কে অর্জিত সাধারণ জ্ঞানই হল ধারণা।
মনােবিদ স্যলির মতে সংবেদন কী?
মনােবিদ স্যলির মতে, একটি অন্তর্মুখী স্নায়ুর বহিঃপ্রান্ত উদ্দীপিত হয়ে মস্তিষ্কে উদ্দীপনা সঞ্চারিত হলে তার দ্বারা যে সহজ মানসিক প্রক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তাকেই বলা হয় সংবেদন।
ধারণার একটি সংজ্ঞা উল্লেখ করাে।
ধারণা হল একটি মানসিক প্রক্রিয়া যা বস্তু, ঘটনা বা ভাবের মধ্যে সাদৃশ্য চিহ্নিত করে এবং অন্যদের থেকে তাকে পৃথক করে বিশেষ শ্রেণিভুক্ত করে। যেমন, সজীব বস্তুর ধারণা।
ধারণার যে-কোনাে দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করাে।
ধারণার দুটি বৈশিষ্ট্য হল— ধারণা একটি জটিল মানসিক প্রক্রিয়া। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর মধ্যে ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে বস্তু সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়ােজন হয়।
ধারণা গঠনের পদ্ধতি বা নীতিগুলি কী কী?
ধারণা গঠনের নীতিগুলি হল- পার্থক্য ও পছন্দের নীতি, গুণবিষয়ক জ্ঞানের নীতি, উপযুক্ত পরিভাষার নীতি, ক্লমপর্যায়ের নীতি, বিশ্লেষত্রে নীতি, সামান্যীকরণের নীতি, আত্ম-অন্বেষণের নীতি, ব্যবহারের নীতি এবং মূল্যায়নের নীতি।
ইনফরমেশন প্রসেসিং তত্ত্বের দ্বারা ধারণা গঠনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।
ইনফরমেশন প্রসেসিং তত্ত্বের দ্বারা ধারণা গঠনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল- শিক্ষার্থী তার পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বর্তমান বস্তু বা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ধারণা গঠন করে৷ এখানে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে একটি প্রাথমিক ধারণা বা প্রকল্প গঠন করা হয়।
প্রত্যক্ষ ও ধারণার দুটি পার্থক্য লেখাে।
প্রত্যক্ষণ ও ধারণার দুটি পার্থক্য হল- প্রত্যক্ষণ সর্বদাই মূর্ত প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে, ধারণা মূর্ত এবং বিমূর্ত-উভয় প্রকৃতিরই হতে পারে। প্রত্যক্ষ বাস্তব বস্তুভিত্তিক। অন্যদিকে ধারণা একটি 'প্রতীক' মাত্র।
আরােহণ পদ্ধতি বলতে কী বােঝ?
যে পদ্ধতিতে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার অভিজ্ঞতা থেকে সাধারণ ধারণা গঠন করা হয়, তাকে বলে আরােহণ পদ্ধতি। যেমন, বিভিন্ন উৎস থেকে জল নিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা গেল যে সবক্ষেত্রেই জলের উপাদানে দুভাগ হাইড্রোজেন এবং এক ভাগ অক্সিজেন। অতএব সিদ্ধান্ত করা যায়—জলে দু-ভাগ হাইড্রোজেন এবং এক ভাগ অক্সিজেন আছে। সিদ্ধান্তগ্রহণের এই পদ্ধতিকে বলা হয় আরােহণ পদ্ধতি।
ধারণা গঠনের একটি নিয়মের উল্লেখ করাে।
ধারণা গঠনের জন্য প্রথমে নির্দিষ্ট শ্রেণির বিভিন্ন বস্তুকে পর্যবেক্ষণ করা হয়।
