বাঙলা নাট্যরচনার ধরায় দ্বিজেন্দ্রলালের পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক নাটক | বাঙলা নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়-এর রচনাবলীর মূল্য বিচার

বাঙলা নাট্যসাহিত্যে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়-এর রচনাবলীর মূল্য বিচার

কবি ও নাট্যকার দ্বিজেন্দ্রলাল রায় (১৮৬৩-১৯১৩) বয়সে প্রায় রবীন্দ্রনাথের সমান, কিন্তু সাহিত্যক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিলেন অনেক দেরীতে। তিনি যখন সাহিত্যক্ষেত্রে প্রবেশ করেন তখন রবীন্দ্র-প্রতিভা পূর্ণশক্তিতে বিকাশ লাভ করে বাঙলা সাহিত্যে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে। রঙ্গমঞ্চে তখন গিরিশচন্দ্রের প্রভাব পূর্ণমাত্রায় বিরাজিত। সুতরাং সাহিত্যে এবং রঙ্গমঞ্চে আত্মপ্রতিষ্ঠা দ্বিজেন্দ্রলালের পক্ষে যে খুব সহজসাধ্য হয় নি, তা সহজেই অনুমান করা যায়। দ্বিজেন্দ্রলালের ব্যক্তিত্বের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য প্রথর স্বাতন্ত্রবােধ। নিজের রুচি-প্রকৃতি-অনুযায়ী তিনি স্বকীয় আদর্শ উদ্ভাবন করতে চেষ্টা করতেন। এইজন্যেই রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নানা প্রসঙ্গে তার বিরােধ উপস্থিত হয়।


রবীন্দ্রনাথ-সৃষ্ট ভাব-পরিমণ্ডলের সঙ্গে দ্বিজেন্দ্রলালের মানসিকতার কোন সামঞ্জস্য ছিল না। দ্বিজেন্দ্রলাল এক্ষেত্রে নিজের পথে অগ্রসর হয়েছেন। রঙ্গমঞ্চের প্রতি যখন তিনি আকৃষ্ট হলেন তখনও নির্বিবাদে গিরিশচন্দ্র-প্রবর্তিত নাট্যরীতি স্বীকার করে নিতে পারেন নি। মধুসূদন থেকে বাঙলায় পাশ্চাত্ত্য নাট্যকলা আত্মীকরণের যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল গিরিশচন্দ্রে তা খণ্ডিত হয়ে যায়। গিরিশচন্দ্র লােকরুচির তৃপ্তি-সাধন এবং ব্যবসায়িক সাফল্যের জন্য রঙ্গমঞ্চে যাত্রার ধরনের অভিনয়-পদ্ধতি অনেক পরিমাণে প্রশ্রয় দেন। দ্বিজেন্দ্রলালে দেখা গেল তার প্রতিক্রিয়া। পাশ্চান্ত্য নাট্যরীতি অনুসরণই যে বাঙলা নাটকের মুক্তির পথ এই নিশ্চিত ধারণা নিয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল নাটক রচনায় অগ্রসর হন।


প্রথমদিকে দ্বিজেন্দ্রলাল কয়েকটি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপময় প্রহসন রচনা করেছিলেন। কল্কি অবতার, বিরহ', 'ত্রহস্পর্শ প্রভৃতি লঘুরসের নাটকের স্থায়ী সাহিত্যিক মূল্য কিছুই নেই। তিনি পরপারে এবং বঙ্গনারী নামে যে দুটি সামাজিক নাটক রচনা করেন। তাতে গিরিশচন্দ্রের সামাজিক নাটকের আদর্শ অনুসরণ করেছেন। এই রচনা দুটিও বৈশিষ্ট্যবর্জিত। নাট্যকার হিশেবে তার কৃতিত্ব নির্ভর করছে পৌরাণিক ও ঐতিহাসিক নাটকের ওপরে। নাট্য-বিষয়বূপে পৌরাণিক নাটকের জনপ্রিয়তা আমাদের নাট্যকারদের মধ্যে কোনদিন কমে নি। মধুসূদন পৌরাণিক বিষয় নিয়ে সার্থকভাবে বাঙলা নাট্যসাহিত্যের সূচনা করেছিলেন। একমাত্র দীনবন্ধু ছাড়া প্রধান নাট্যকারদের মধ্যে সকলেই বিষয়বস্তুর জন্য পৌরাণিক কাহিনীর ওপরে কমবেশি নির্ভর করেছেন। পৌরাণিক কাহিনী ব্যবহার করেও সেই প্রত্যক্ষ বাস্তবতা থেকে দূরবর্তী মায়াময় জগতের বাতাবরণে যে মানবিক আবেগ-অনুভূতি সার্থকভাবে রূপায়িত করা যাবে, দ্বিজেন্দ্রলাল তা প্রমাণ করেছেন 'পাষাণী', 'সীতা' এবং 'ভীষ্ম' নাটকে।


গিরিশচন্দ্রের পৌরাণিক নাটকগুলাে অলৌকিকতা এবং দৈবের শক্তি প্রমাণ করবার মাধ্যমস্বরূপ হয়ে উঠত। পৌরাণিক চরিত্রগুলাে অবলম্বনে তিনি যুক্তি-বুদ্ধি-দ্বারা ব্যাখ্যার অতীত অলৌকিক ক্রিয়াকলাপে নাটক পূর্ণ করে তুলতেন। এভাবে ভক্তিরসের উচ্ছ্বাস জাগানাে সহজ হলেও প্রকৃত নাট্যরস সৃষ্টির উদ্দেশ্য অনিবার্যভাবে ব্যর্থ হত। অন্যপক্ষে দ্বিজেন্দ্রলাল পৌরাণিক কাহিনীর বাতাবরণে পৌরাণিক চরিত্র অবলম্বনে ও মুখ্যত মানবিক প্রবৃত্তি এবং মানবিক হৃদয়াবেগের দ্বন্দ্বকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। দ্বিজেন্দ্রলালের প্রথম পৌরাণিক নাটক ‘পাষাণীতে' (১৯০০) অহল্যার যৌবনের নিষ্ফলতা, কামনার ব্যর্থতা ও ইন্দ্রের প্রতি লালসাময় আকর্ষণ নাট্যকার সহানুভূতির সঙ্গেই চিত্রিত করেছেন। অহল্যার থেকে অধিকতর দোষী, শঠ, প্রতারক ও লম্পট পুরুষ জাতি, ইন্দ্র যার প্রতিনিধি, নাটকে এটাই প্রদর্শিত হয়েছে। 'সীতা' (১৯০৮) রামায়ণ ও ভবভূতির 'উত্তররামচরিত' অনুসরণে লিখিত। নাট্যকার তার হৃদয়ের সমস্ত সহানুভূতি ও আশা দিয়ে সীতা চরিত্র অঙ্কিত করেছেন। 'ভীষ্ম' (১৯১৪) নাটকে প্রাচীন ভারতবর্ষের এবং ভীষ্মের ব্যক্তিত্বের চিত্র উজ্জ্বল ও জীবন্ত। কিন্তু শেষের দিকে নাটকটি শিথিলবিন্যস্ত এবং বৃদ্ধ পিতামহরূপে ভীষ্মের চিত্রও মহিমাবর্জিত।


পুরাণ কাহিনীর মতােই দেশের প্রাচীন ইতিহাস, বিশেষভাবে মুঘল রাজপুত ইতিহাস বাঙালী নাট্যকারদের কাছে বিষয়বস্তুর অফুরন্ত উৎসরূপে সমাদৃত হয়েছে। দ্বিজেন্দ্রলাল অবশ্য আরও প্রাচীন ইতিহাস থেকে নাট্য-বিষয় সংগ্রহ করেছেন তাঁর 'চন্দ্রগুপ্ত' এবং 'সিংহল বিজয় নাটকে। দ্বিজেন্দ্রলালের মঞ্চসফল জনপ্রিয় নাটকগুলাের মধ্যে 'চন্দ্রগুপ্ত' অন্যতম। তার অন্যান্য ঐতিহাসিক নাটকের মধ্যে প্রসিদ্ধ রচনা 'প্রতাপসিংহ', 'দুর্গাদাস', 'নূরজাহান', 'মেবার পতন', 'সাজাহান' প্রভৃতি।


বাঙলী নাট্যকারেরা সাধারণতঃ দেশপ্রেমের ভাব পরিস্ফুট করবার জন্যই ঐতিহাসিক কাহিনী অবলম্বন করতেন। নূরজাহান’ বা ‘সাজাহান’-এর মতাে নাটকে দেশপ্রেমের উদ্দীপনা কোথাও নেই। ভারতবর্ষের সিংহাসনকে কেন্দ্র করে নানামুখী স্বার্থ-সংঘাত এবং ক্ষমতাদ্বন্দ্বের যে বিচিত্র ইতিহাস মুসলমান-আমলে গড়ে উঠেছে এবং সেই পটভূমির মধ্যে মানবিক প্রবৃত্তির যে বেদনামিশ্রিত পরিণতি দেখা গিয়েছে, দ্বিজেন্দ্রলাল তারই আলেখ্য রচনা করেছেন। এই নাটকগুলােতে দ্বিজেন্দ্রলাল চরিত্ররূপায়ণে একান্তভাবে শেক্সপীয়রীয় পদ্ধতির অনুসরণ করেছেন। প্রধান চরিত্রগুলাে পরিস্ফুট হয়েছে অন্তর ও বাহিরের দ্বন্দ্বে, প্রবৃত্তিবেগতাড়িত তাদের জীবন ট্র্যাজিক পরিণতিতে শেষ হয়েছে। 'প্রতাপসিংহ', 'দুর্গাদাস' প্রভৃতি নাটকে অবশ্য দেশপ্রেমের আদর্শ রূপায়ণের চেষ্টা আছে। 'মেবার পতন' নাটকে সংকীর্ণ দেশপ্রেমের উর্ধ্বে উঠে দ্বিজেন্দ্রলাল বিশ্বপ্রেমের আদর্শ প্রচার করেছেন। গঠনের দিক থেকে এবং নাট্যগুণের বিচারে দ্বিজেন্দ্রলালের রচনাবলীর মধ্যে ঐতিহাসিক নাটকগুলিই শ্রেষ্ঠ রচনা।


দ্বিজেন্দ্রলাল পৌরাণিক ও সামাজিক নাটক রচনায় বিশেষ সফল হন নি, অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রয়ােগ করতে গিয়েও তিনি অস্বস্তি অনুভব করেছেন। গদ্যে ঐতিহাসিক নাটক লিখতে গিয়েই তিনি তাঁর নাট্যপ্রতিভার বিকাশের স্বাভাবিক ক্ষেত্রটি খুঁজে পান।


'তারাবাঈ' (১৯০৩) তার প্রথম ঐতিহাসিক নাটক, বিষয় রাজস্থান-কাহিনী থেকে সংগৃহীত। নাটকটি ত্রুটিবিচ্যুতিতে পূর্ণ। 'প্রতাপসিংহ' (১৯০৫) থেকেই দ্বিজেন্দ্রলালের স্বাদেশিকতার ভাবােদ্দীপনাময় নাট্যরচনাধারার সূত্রপাত। স্বাধীনতা সংগ্রামের অক্লান্ত যােদ্ধা প্রতাপের দুর্দমনীয় বীরত্ব, অতুলনীয় দেশপ্রেম ও মহনীয় আত্মহত্যার জ্বলন্ত চিত্র নাট্যকার ফুটিয়ে তুলেছেন। ঘটনার মাত্রাতিরিক্ত বাহুল্যে, বহুসংখ্যক চরিত্রের উপস্থাপনায়, ঘটনার বিভিন্ন সুনিশ্চয়তার সুগভীর রস 'দুর্গাদাস'-এ (১৯০৬) নাট্যগুণ দানা বাঁধতে পারে নি। 'দুর্গাদাস' সমগ্র মানবীয় দোষ-দুর্বলতার অতীত বিশুদ্ধ আদর্শ চরিত্ররূপে অঙ্কিত হওয়ায় নিষ্প্রাণ হয়ে পড়েছে। 'নূরজাহান' (১৯০৮) ঐতিহাসিক ট্র্যাজিকরূপে বিশেষ উল্লেখযােগ্য। সাজাহানে’র ট্র্যাজিডির ভিত্তি সাজাহান, ঔরংজীব, দারা, সুজা, মহম্মদ, সােলেমান প্রভৃতি চরিত্র; কিন্তু 'নূরজাহানে'র ট্র্যাজেডি সম্পূর্ণরূপেই নূরজাহান-কেন্দ্রিক। নায়িকার নামিত অন্যান্য বাঙলা নাটকে 'কৃষ্ণকুমারী', ‘অশুমতী' ইত্যাদিতে নায়িকারা শুধু দুঃখভােগ করেছে, তাদের ট্র্যাজেডির মূল তাদের চরিত্রে নয়, বাইরে নিহিত। 'নূরজাহানে' ই সর্বপ্রথম বাঙলা নাট্যসাহিত্যে ট্র্যাজিক নারীচরিত্রের উদাহরণ দেখা গেল। নূরজাহান ক্ষমতালােভে, বাসনা- কামনার, প্রচণ্ড আবেগ ও বিবেকের নির্মম সংঘাতে ক্ষতবিক্ষত ট্র্যাজিক নারীচরিত্র।


'সাজাহান' (১৯০৯) দ্বিজেন্দ্রলালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক নাটক। বহু চরিত্র ও বিভিন্ন উপকাহিনীকে নাট্যকার মূল কাহিনীর সঙ্গে নিপুণভাবে যুক্ত করেছেন। সাজাহানের মধ্যে সেক্সপীয়রের লিয়রের ছায়া স্পষ্ট। মুখ্য চরিত্র ঔরংজীব কুটিল, নিষ্ঠুর কিন্তু তার মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্বের আলােড়ন লক্ষ্য করা যায়। জাহানারার ব্যক্তিত্বও জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে। পিয়ারার আপাতচপল কৌতুকপরিহাসের অন্তরালে দুঃখবেদনায় জলভারাবনত মেঘ পূঞ্জীভূত হয়ে আছে বলে অনুভব করা যায়; ভাবব্যঞ্জনাময় সংলাপও সাজাহানের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য।


নাটকের রচনার একটি প্রধান সমস্যা সংলাপের ভাষা ব্যবহারের সমস্যা। নাটকের রচনাশৈলীর ক্ষেত্রে দ্বিজেন্দ্রলাল সংলাপের ভাষা নিয়ে নানাপ্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তিনি বলেছেন, "বাঙলা ভাষায় নাট্য-সাহিত্যে স্বাভাবিকতা ও আখ্যানবস্তু গঠনে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিতাম, কিন্তু তাহাতে কবিত্বের অভাববােধ হইত। আমার কাব্যশক্তি আমি আমার নাটকে প্রকটিত করিতে প্রবৃত্ত হইলাম।" দ্বিজেন্দ্রলাল অতি সচেতনভাবে নাট্যসংলাপে কাব্যগুণান্বিত ভাষা প্রয়ােগ করেছেন। কবিতার প্রতি অত্যধিক আসক্তি থাকায় তিনি গদ্যভাষাকে কবিতার আসনে বসাবার প্রলােভন পরিত্যাগ করতে পারেন নি। এ বিষয়েও দ্বিজেন্দ্রলাল শেক্সপীয়রের অনুসারী। ফলে তার নাটকের দীর্ঘ সংলাপগুলাে অধিকাংশ ক্ষেত্রে উচ্ছাসপূর্ণ। এই ধরনের সংলাপ যে সব সময়ে নাট্যরস ও স্ফৃর্তির পক্ষে সহায়ক হয়েছে তা নয়। নাট্যসংলাপের ভাষা সংস্কার করতে গিয়ে দ্বিজেন্দ্রলাল অনেক ক্ষেত্রে নাটকের পরিস্থিতি এবং নাট্যচরিত্রের সঙ্গে সঙ্গতিহীন কাব্যাক্রান্ত গদ্যে বর্ণনাত্মক সংলাপ রচনা করে নাটককে দুর্বলই করেছেন। তবুও এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় লেখক হিসাবে তার প্রখর আত্মসচেতনতা এবং দায়িত্ববােধের পরিচয় পাওয়া যায়। গিরিশচন্দ্রের প্রভাবে আচ্ছন্ন বাঙলার নাট্যজগতে তিনি সাহিত্যিক উৎকর্ষের দিকে দৃষ্টি রেখে বাঙলা নাটকের সাহিত্যিক মান উন্নয়নের জন্য যে চেষ্টা করেছেন তা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।


দ্বিজেন্দ্রলালের ঐতিহাসিক নাটকগুলির বৈশিষ্ট্য বিষয়ে অধ্যাপক ভট্টাচার্য বলেন, "সমকালে জাতীয়তাবােধে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতীয় উন্মাদনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে অনেক নাট্যকারই ঐতিহাসিক নাটকে ইতিহাসের বিকৃতি সাধন করে বিশেষ কোন চরিত্র বা ঘটনাকে উদ্দেশ্যানুরূপ রুূপদান করেছেন, কিন্তু দ্বিজেন্দ্রলাল এবিষয়ে অনেকখানি সচেতন ছিলেন এবং উদ্দেশ্য-সিদ্ধির প্রয়ােজনে ইতিহাসকে বিকৃত করেন নি।" এ বিষয়ে তার জীবনীকার দেবকুমার রায়চৌধুরী লিখেছেন, "তাহার ঐতিহাসিক নাটকগুলি অতিসাবধানতার সহিত লিখিত। কোন স্থানেই তিনি ইতিহাসকে একেবারে অতিক্রম করেন নাই। যেখানে ইতিহাসকার নীরব, মাত্র সেখানেই তাহার মােহিনী কল্পনা অতি নিপুণতার সহিত বর্ণপাত করিয়াছে।"