তখনকার দিনে ধার্মিক পণ্ডিতেরা এসব বিশ্বাস করতে চাইলেন না | প্রথমে Inquisition রায় দিলেন যে | কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরিচয় | শিক্ষার্থী গালিলিওর তার্কিক মনােভাবের পরিচয়

"তখনকার দিনে ধার্মিক পণ্ডিতেরা এসব বিশ্বাস করতে চাইলেন না।"- ধার্মিক পণ্ডিতরা কী বিশ্বাস করতে চাইলেন না এবং কেন?

প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, হল্যান্ডদেশীয় এক ব্যক্তি এক অভিনব যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন শুনে গালিলিও দূরবিন তৈরি করেন। ক্রমশ সেটি আরও উন্নত এবং শক্তিশালী হয়ে ওঠে। সেই দূরবিনে চোখ রেখে আকাশের অনেক নতুন নতুন দৃশ্য তিনি আবিষ্কার করেন যেসব দৃশ্য ইতিপূর্বে ছিল মানুষের কল্পনার বাইরে। গালিলিও লক্ষ করেন যে, চন্দ্রপৃষ্ঠ অত্যন্ত অসমান ও বন্ধুর যাকে চাদের পাহাড়' বলা হয়।


ছায়াপথ যে প্রকৃতপক্ষে লক্ষ লক্ষ নক্ষত্রের সমাবেশমাত্র, তাও পর্যবেক্ষণ করেন তিনি। এ ছাড়া গালিলিও দেখলেন যে, বৃহস্পতির চারদিকে চারটি উপগ্রহ প্রদক্ষিণ করছে। আমাদের পৃথিবীকেও প্রদক্ষিণ করছে তার একটিমাত্র উপগ্রহ চাদ। তখনকার দিনের ভেনিসবাসী ধার্মিক পণ্ডিতরা গালিলিওর এসব পর্যবেক্ষণের কথা বিশ্বাস করতে চাইলেন না। কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই পণ্ডিতেরা গালিলিও র শত অনুরােধেও কিছুতেই দূরবিনে চোখ রাখতে চাইলেন না, পাছে তাদের ধর্মবিশ্বাস টলে যায়—এই ভয়ে। দূরবিনে চোখ না রেখেই তাঁরা বললেন যে, কোনাে জাদুশক্তির প্রভাবেই দূরবিন দিয়ে বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ দেখা যাচ্ছে। তাদের মতে যা খালি চোখে দেখা যায় না, তা যদি যন্ত্র দিয়ে দেখা যায়, তাহলে সেটা মােটেও বাস্তব নয়, কেবল যন্ত্রের কারসাজি। তারা আরও ভাবলেন যে, এইভাবে গালিলিও কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ব-বিন্যাসের পক্ষে যুক্তি সংগ্রহের মতাে অন্যায় কাজ করছেন।



“প্রথমে Inquisition রায় দিলেন যে," -কী রায় দিয়েছিলেন তা প্রসঙ্গ উল্লেখ করে লেখাে

১৬১১ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্সে ফিরে এসে গালিলিও নিজের আবিষ্কৃত দূরবিন যন্ত্রের সাহায্যে গ্রহমণ্ডলের অনেক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করার পর কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদে স্থির বিশ্বাসী হয়ে উঠলেন। কিন্তু প্রাচীনপন্থীরা গালিলিওর তীব্র বিরােধিতা শুরু করেন। তাদের মধ্যে একদিকে ছিলেন ফ্লোরেন্সের ডােমিনিকান সম্প্রদায়ের সন্ন্যাসীরা, অন্যদিকে ছিলেন গালিলিওর খ্যাতি ও মেধায় ঈর্ষান্বিত পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র এবং অধ্যাপক। তারা গােপনে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে গালিলিওর বিরুদ্ধে অভিযােগে জানালেন যে, গালিলিও ধর্মবিদ্বেষী প্রচার করছেন, বাইবেলের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করতে চাইছেন। এইসব যড়যন্ত্রের কারণেই সেখানকার ক্যাথলিক চার্চ নিযুক্ত ইনকুইজিসন-এ তিনি অভিযুক্ত হলেন।


ইনকুইজিসন প্রথমে রায় দিল যে, সূর্য মহাবিশ্বের কেন্দ্রে অবস্থিত এই সিদ্ধান্ত একেবারেই যুক্তিহীন এবং প্রকৃত ধর্মবিধির বিরােধী। কারণ, যাজক এবং অন্যান্য পণ্ডিত ব্যক্তিরা এতদিন ধরে বাইবেলের যে ব্যাখ্যা দিয়ে এসেছেন, তার সঙ্গে এর কোনাে মিল নেই। সঙ্গে এ কথাও বলা হল যে, পৃথিবীর আহ্নিক ও বার্ষিক গতির ধারণাও প্রকৃতপক্ষে সত্যধর্মবিরােধী। এ কারণেই ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে ইনকুইজিসন কোপারনিকাসের বই এবং সেই সংক্রান্ত আরও দুটি বইকে বেআইনি ঘােষণা করলেন এবং রােমে পােপের কাছে সমস্ত সংবাদ পৌঁছেও দিলেন।



‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরিচয় দাও।


সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে জানা যায় যে, সূর্য যে জগতের কেন্দ্রস্বরূপ’–এই মত এবং পৃথিবীর আহ্নিক ও বার্ষিক গতি বিষয়ক গালিলিওর মত খ্রিস্টান ধর্মমতের সম্পূর্ণ বিরােধী ছিল। এ কারণেই ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে ইনকুইজিসনের বিচারকরা রােমে পােপের নিকট গালিলিওর বিরুদ্ধে অভিযােগ করলে পােপ কার্ডিনাল বেলারিমিনকে দায়িত্ব দেন গালিলিওকে শােধরানাের। রােমান ক্যাথলিক ধর্মসম্প্রদায়ের প্রধান পাপের পরামর্শদানকারী অধস্তন পদাধিকারীরাই হলেন কার্ডিনাল'। নির্দেশ অনুযায়ী রােমে গালিলিওর ডাক পড়লে সেখানে যাবার আগেই বেলারিমিন তাকে নিজের প্রাসাদে ডেকে নেন। পােপ এবং অন্যান্য কার্ডিনালদের মনােভাব আগে থেকেই বুঝতে রে বেলারিমিন গালিলিওকে বাস্তববাদী হওয়ার অনুরোধ করেন।


তিনি গালিলিওকে দুটি পরামর্শ দিয়েছিলেন—প্রথমত, গালিলিও যেন কোপারনিকাসের তত্ত্ব নিয়ে ধর্মযাজকদের সঙ্গে অযথা তর্ক না করেন। দ্বিতীয়ত, বাইবেলের পঙক্তি উদ্ধৃত করে গালিলিওকে তার নিজের মত ব্যাখ্যা করতেও নিষেধ করেন তিনি।


গালিলিও কার্ডিনাল বেলারিমিনের পরামর্শে সম্মত হয়েছিলেন বলেই ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দের ইনকুইজিসনে বড়াে রকমের শাস্তি থেকে তিনি রেহাই পেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর বেলারিমিনের মৃত্যু হওয়ায় শেষজীবনে গালিলিওকে রােমের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের হাতে অশেষ নিগ্রহ সহ্য করতে হয়েছিল। সুতরাং, কার্ডিনাল বেলারিমিন ছিলেন প্রকৃতই উদার হৃদয়ের মানুষ—যিনি ছিলেন বিজ্ঞানী গালিলিওর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তার হিতাকাঙ্ক্ষী।



গালিলিওর পিতৃ-পরিচয় লিপিবদ্ধ করে শিক্ষার্থী গালিলিওর তার্কিক মনােভাবের পরিচয় দাও।


বিজ্ঞানাচার্য সত্যেন্দ্রনাথ বসুর লেখা 'গালিলিও প্রবন্ধ থেকে জানা যায়, বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী গালিলিও ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইতালির তৎকালীন তাস্কানী (Tuscany) রাষ্ট্রের পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। গালিলিওর পিতার পদবি ছিল গালিলাই। তিনি পুরাণ-সাহিত্যের কৃতী লেখক ছিলেন। তা ছাড়া সংগীত এবং গণিতশাস্ত্রেও পারদর্শী ছিলেন। তৎকালে প্রচলিত লিউট (Lute) নামে এক বীণা জাতীয় তারের বাজনাও ভালাে বাজাতে পারতেন তিনি। এ ছাড়া তিনি সংগীততত্ত্বের ওপর কয়েকটি বইও লিখেছিলেন।


১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে মাত্র সতেরাে বছর বয়সে গালিলিও ডাক্তারি পড়তে পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভরতি হন। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে-কোনাে শাখার ছাত্রকেই দর্শনশাস্ত্র পড়তে হত। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের যুগ হওয়ায় ইউরােপে অ্যারিস্টটলের কথা ও মতবাদকে সবাই বিনা প্রশ্নে তখন মেনে নিতেন। গালিলিও কিন্তু বিনা প্রশ্নে, বিনা তর্কে কোনােকিছু গ্রহণ করার পক্ষপাতী ছিলেন না। কারাের, কোনাে কথাকেই বেদবাক্য বলে মানতে চাইতেন না তিনি। তিনি অ্যারিস্টটলের অনেক মতবাদকেই যুক্তিহীন বলে বিবেচনা করেন। তাই বলা যায় যে, যুক্তিবাদী মানসিকতার জন্য এবং অ্যারিস্টটল-বিরােধিতার কারণেই পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডাক্তারি শাস্ত্র অধ্যয়নের সময় সহপাঠীদের সঙ্গে এবং শিক্ষকদের সঙ্গে তার প্রায়ই বাগযুদ্ধ’ হত।


"স্বর্গে ইঁদুর বাহন প্লেগ পাছে ওঠে, তাই এত আয়ােজন।" -উদ্ধৃত অংশটির মধ্য দিয়ে লেখক কী বলতে চেয়েছেন?

"গতস্য শােচনা নাস্তি" -কথাটির আক্ষরিক অর্থ উল্লেখ করে সপ্রসঙ্গ মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করাে।

"যাক, ওটা কেটে দাও, জলে পড়ুক, বােঝা কমুক;...।” ঘটনাটি সংক্ষেপে লিখে হাঙর শিকারের ক্ষেত্রে নৃশংসতার প্রসঙ্গটি বিবৃত করাে।

স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে :হাঙ্গর শিকার রচনা অবলম্বনে জাহাজযাত্রীদের হাঙর শিকারের প্রস্তুতির বিবরণ দাও।


“আড়কাটী মাছকে উপযুক্ত শিক্ষা দিলে কিনা তা খবর পাইনি...।" -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ঘটনাটির বর্ণনা দাও। আড়কাটী মাছ’-এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

“কাজেই রাতেও যাওয়া হবে না, চব্বিশ ঘণ্টা এইখানে পড়ে থাকো...।" -রাতে না গিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা পড়ে থাকার কারণ বিশ্লেষণ করাে।

সুয়েজখালে :হাঙ্গর শিকার রচনায় জাহাজের যাত্রীদের সঙ্গে মিশরীয় অধিবাসীদের যাতে কোনাে ছোঁয়াছুঁয়ি না হয়, তার জন্য কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?

হাকাহাকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালেন। আরব মিঞার কর্মতৎপরতার পরিচয় দাও।


ভারতের বাণিজ্যকে লেখক মানব-জাতির উন্নতির সম্ভবত সর্বপ্রধান কারণ বলেছেন কেন?

“এ কথা ইউরােপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না;" -কোন কথা ইউরােপীয়রা স্বীকার করতে চায় না এবং কেন?

“জাহাজের পেছনে বড়াে বড়াে হাঙ্গর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে।" -লেখকের অনুসরণে হাঙরের সেই ভেসে ভেসে বেড়ানাের দৃশ্য নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

সুয়েজখালে জাহাজ পারাপারের ব্যবস্থা বর্ণনা করাে।


ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে লেখকের মনােভাব ব্যাখ্যা করাে।

“যাঃ, টোপ খুলে গেল! হাঙ্গর পালালাে।" -টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনা অবলম্বনে লেখাে।


‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিও-র চরিত্রের প্রতিবাদী সত্তার পরিচয় দাও।

গ্যালিলিও প্রবন্ধে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিওর আপসকামী মনােভাবের যে পরিচয় দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিওর জন্মস্থান পিসায় অতিবাহিত হওয়া তার ছেলেবেলার পরিচয় দাও।

“গণিতের অধ্যয়নবাসনাই প্রবল হয়ে উঠল।" -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলাে কীভাবে গালিলিওর গণিতের অধ্যয়ন- বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছিল?


প্রথম যৌবনে স্বদেশে থাকাকালীন সংসার চালানাের জন্য কীভাবে লড়াই করতে হয়েছিল গালিলিও-কে, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে ভেনিস রাষ্ট্র এবং পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গালিলিও-র আঠারাে বছরের কর্মজীবনের বিবরণ দাও।

দূরবিনের আবিষ্কার ভেনিসনিবাসী গালিলিওর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

"এখানেই শুরু হল তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞানীর জীবন।" -প্রকৃত বিজ্ঞানীর’ সেই জীবন বর্ণনা করাে।


'গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গালিলিওর স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করাে।

স্বদেশে ফেরার পর দেশের ধার্মিক ও শিক্ষিত মানুষদের সঙ্গে কীভাবে গালিলিও সংঘাতে জড়িয়ে পড়লেন, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

"আর এক কারণে তাঁর সব আবিষ্কার ও মতামত শুধু পণ্ডিত মহলে আবদ্ধ রইল না।" -কারণটি বিস্তৃতভাবে পর্যালােচনা করাে।

গালিলিওর শেষ ন'বছরের জীবনকথা গালিলিও' প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।