রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি | বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গালাপচারা | আমরা তাে অল্পে খুশি

"আমরা তাে অল্পে খুশি" -বক্তা সত্যিই খুশি কি না আলােচনা করাে।

জয় গােস্বামীর 'নুন' কবিতার কথক নিম্নবিত্ত জীবন যাপন করে। সাধারণ ভাতকাপড়ে কোনােরকমে অতিবাহিত করা তার এই জীবনে অসুখ ও ধারদেনা নিত্যসঙ্গী। এর মধ্যেই হেসে খেলে, কষ্ট করে দিন কাটে তার; বলা ভালাে, কথক এভাবেই দিন কাটাতে বাধ্য হয়। এই বাঁধাধরা, আশাহীন জীবন কাটানাের প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।


যেহেতু বক্তার জীবনে ‘খুশি’র যথার্থই কোনাে অস্তিত্ব ছিল না, তাই তা সাময়িক হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। গােপনে লালিত শখ পূরণ করতে গিয়ে তাই বাড়িতে গােলাপচারা কিনে আনলেও, “কিন্তু, পুঁতবাে কোথায়? ফুল কি হবেই তাতে?”— এক বিষন্ন অনিশ্চয়তা ঘিরে ধরে কথককে। আর তাকে ভুলে থাকার জন্যই তখন প্রয়ােজন হয় গাঁজার নেশায় ডুবে যাওয়া। কিন্তু দুঃখকে এড়িয়ে এভাবে বেঁচে থাকা অসম্ভব। তাই 'মাঝে মাঝে চলেও না দিন'। গভীর রাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে খাবার উপযুক্ত নুনটুকুও না পেলে তখন তাই রাগ মাথায় চড়ে যায়। সমস্ত রকম সামাজিক সৌজন্য ভুলে তখন তারা আর নিজেদের ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। চিৎকার চেচামেচির মধ্য দিয়ে তারা তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। বাপব্যাটা দু-ভাই মিলে সারা পাড়া মাথায় করে। অল্পে খুশি হওয়ার আবরণ ছিড়ে যায় কঠোর বাস্তবের সঙ্গে সংঘাতে।


"বাড়িতে ফেরার পথে কিনে আনি গালাপচারা।" -অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।

কবি জয় গােস্বামী তার বাস্তব অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন 'নুন' কবিতায়।


নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবন প্রতিদিনকার অভাব আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে কোনােরকমে কেটে যায়। অভাব আর ধারদেনা সত্ত্বেও তাদের জীবনদর্শনের মধ্যেই রয়েছে এক ধরনের বেহিসেবি বাউন্ডুলেপনা। অভাবের জন্য তাদের সব দিন বাজার করা সম্ভব না হলেও, যেদিন তা সম্ভব হয় সেদিন বাজার হয় মাত্রাছাড়া। আবার এই অসংযমী জীবনই কিন্তু অভাবের মধ্যেও গােপনে লালিত সুখকে খোঁজে, মনের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখে তার ভাবনা বিলাসকে। স্বপ্নে মশগুল মানুষটি তাই হয়তােবা সৌন্দর্যপ্রিয়তার খাতিরে বাড়িতে ফেরার সময় গােলাপচারা কিনে আনে। বলা বাহুল্য, এই গােলাপচারা আসলে নিম্নবিত্ত মানুষের অবদমিত সুখ-স্বপ্নের ইঙ্গিতবহ।


আসলে বাস্তবজীবনে মানুষ যত দরিদ্রই হােক না কেন, তাদের মনের রােমান্টিকতা কখনােই মরে যায় না। শখ বা ইচ্ছার প্রকাশস্বরূপ তাই গােলাপচারা কিনে আনার কথা এই কবিতায় বলা হয়েছে। তাই গােলাপচারা কেনার সময় নিম্নবিত্ত মানুষের মনেই থাকে না যে গাছটুকু লাগাবার মতাে সামান্য জায়গাও তাদের নেই। অথবা সেই কিনে আনা গােলাপচারায় ফুল ফোটানাের মতাে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, সংস্থান যা ধৈর্যেরও ভীষণ অভাব তাদের মধ্যে। আলােচ্য পক্তির মধ্য দিয়ে এই নির্মম সত্যকেই প্রকাশ করেছেন কবি।


"কিনে আনি গােলাপচারা" -গােলাপচারা কিনে আনলেও বক্তার জীবনচর্যার প্রকৃত স্বরূপ আলােচনা করাে।

নিম্নবিত্তের দিন আনা দিন খাওয়া জীবনকে অবলম্বন করে জয় গােস্বামীর নুন কবিতাটি রচিত হয়েছে। এ এমন এক জীবন, যেখানে প্রতিদিন বাজার করা সম্ভব হয় না, যেখানে বস্তুজগৎকে ভুলে থাকার জন্য সমস্ত সামাজিক সম্পর্কের বিন্যাস ভুলে পিতাপুত্রকে একসঙ্গে নেশায় ডুব দিতে হয়। কোনােরকমে দিন চলে যাওয়াকে মেনে নিয়েই পৃথিবীতে টিকে থাকার রসদ সন্ধান করতে হয় তাদের।


মাঝেমধ্যেই এভাবেও আর একঘেয়ে দিনযাপন করা সম্ভব হয় না। দুপুররাতে বাড়ি ফিরে ঠান্ডা ভাতে নুন না দেখে তখন তাদের মাথায় রাগ চড়ে যায়। বাবা-ছেলে দুজনে মিলে রেগে গিয়ে তখন সারা পাড়া মাথায় করে। অভাব জন্ম দেয় অসহিষ্ণুতার আর অসহিষ্ণুতা থেকে আসে অসংযম। সামাজিক সৌজন্য বা শালীনতার বােধ তখন আর তাদের মাথায় থাকে না। তাই এক বেপরােয়া মানসিকতায় বলে ওঠে- "করি তাে কার তাতে কী?" আর তখনই মৃত্যু ঘটে তাদের মধ্যেকার রােমান্টিক সত্তা বা ভাবনাবিলাসের, যা তাদের দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবনে গােলাপচারা কিনে আনার ঘটনার মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পায়। কবিতার শেষে অভাব আর অসহায়তা বদলে যায় অধিকার দাবির ঘােষণায়- "আমরা তাে সামান্য লােক/আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।" 'নুন' কবিতাতে এইভাবেই তীব্র অভাব, অল্পে খুশি হওয়া, আর অনেক না-পাওয়া দিয়ে ভরা নিম্নবিত্ত মানুষদের জীবনচিত্র এঁকেছেন কবি জয় গােস্বামী।


"রাগ চড়ে মাথায় আমার, আমি তার মাথায় চড়ি" -রাগকে নিয়ন্ত্রণ না করে কবি তার মাথায় চড়ে কাকে কী বার্তা দিতে চান?

জয় গােস্বামীর লেখা নুন কবিতায় সাধারণ ভাতকাপড়, অসুখ আর ধারদেনাতে চলা এই জীবনে নিম্নবিত্ত মানুষদের প্রতিনিধি কথক ছিলেন অল্পেই খুশি হওয়া একজন মানুষ। কিন্তু গভীর রাতে বাড়ি ফিরে কথক যখন দেখেন তাঁর ঠান্ডা ভাতে সামান্য নুনটুকুও পর্যন্ত নেই—তখনই তার মাথায় রাগ চড়ে যায়।


রাগকে নিয়ন্ত্রণ না করে কথক এখানে রাগের মাথায় চড়েন, অর্থাৎ ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটান। সারা পাড়া এভাবে সেই রাগের কথা জেনে যায় কিন্তু বেপরােয়া কথক বলে ওঠেন—“করি তাে কার তাতে কী?” ব্যক্তিগত হতাশা আর যন্ত্রণা এভাবেই মুহূর্তের মধ্যে ভিতরের ফুঁসতে থাকা মানুষটাকে বের করে আনে। ক্ষোভ আর অসহিষ্ণুতা ভেঙে দেয় শিষ্টাচারের দেয়াল। অভাব-অসুখের মধ্যে "আমরা তাে অল্পে খুশি" বলে সান্ত্বনা খোঁজার চেষ্টা যেখানে নেই, "কী হবে দুঃখ করে" বলে মিথ্যা সুখ খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা যেখানে নেই, নেশার ঘােরে দুঃখকে ভুলে থাকার চেষ্টাও যেখানে নেই,গভীর রাতের অন্ধকারে যেখানে কেউ কাউকে দেখতে পায় না, সেখানেই নিজের মুখােমুখি দাঁড়ান কবিতার কথক। রাগের মাথায় চড়ে কথক যেন দ্বিধাহীনভাবে সমাজ সভ্যতাকে জানিয়ে দেন তাঁর দাবি- "আমরা তাে সামান্য লােক/আমাদের শুকনাে ভাতে লবণের ব্যবস্থা হােক।" ক্রোধ তার অন্তরের আবরণ সরিয়ে দেয়, ভিতরের মানুষকে প্রকাশিত করে সমাজের সামনে। সেই মানুষ শুধু অল্পে খুশি' থাকে তাই নয়, নিজের কথা বলতেও থাকে দ্বিধাহীন।


“হায় শৌখিন পূজারী, বৃথাই/দেবীর শঙ্খে দিতেছ ফু” -মন্তব্যটির তাৎপর্য উল্লেখ করাে।

"মুক্ত কি আজ বন্দিনী বাণী?/ধ্বংস হল কি রক্ষপুর?" -মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

“শতদল যেথা শতধা ভিন্ন / শস্ত্র পাণির অস্ত্র-ঘায়" -মন্তব্যটির তাৎপর্য লেখাে।

"বাণী যেথা ঘানি টানে নিশিদিন, / বন্দী সত্য ভানিছে ধান," -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করে কবি নজরুলের স্বদেশচেতনার পরিচয় দাও।


"আইন যেখানে ন্যায়ের শাসক,/সত্য বলিলে বন্দী হই" -অংশটির মধ্য দিয়ে কবির কোন মনােভাব প্রতিফলিত হয়েছে?

"বাণীর মুক্ত শতদল যথা আখ্যা লভিল বিদ্রোহী" -এই মন্তব্যটির মাধ্যমে বক্তা কী বােঝাতে চেয়েছেন?

"দ্বীপান্তরের ঘানিতে লেগেছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক”। -'যুগান্তরের ঘূর্ণিপাক' কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

“ধ্বংস হল কি রক্ষ-পুর”—‘রক্ষ-পুর’ কী এবং কীভাবে তা ধ্বংস করা সম্ভব?


“হায় শৌখীন পুজারী”—‘শৌখীন পূজারী কে? তাকে ‘শৌখীন’ বলা হয়েছে কেন?

“জীবন-চুয়ানাে সেই ঘানি হতে" রূপকটির ব্যাখ্যা দাও।

"মুক্ত ভারতী ভারতে কই?" -ভারতী বলতে কাকে বােঝানাে হয়েছে? ভারতমাতার পরাধীনতার কথা কবি কীভাবে এই কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন?

"শান্তি-শুচিতে শুভ্র হল কি/রক্ত সোঁদাল খুন খারাব?" -'রক্ত সোঁদাল খুন-খারাব' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? এই রক্তাক্ত অধ্যায় কীভাবে সমাপ্ত হতে পারে বলে কবি মনে করেছেন?


“তবে তাই হােক।”—এক্ষেত্রে কবির অভীষ্ট কী?

“বাণীর কমল খাটিবে জেল।" -দ্বীপান্তরের বন্দিনী কবিতাটি অবলম্বনে মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।


নুন কবিতায় কবির যে জীবনবােধের প্রকাশ ঘটেছে তা উদ্ধৃতিযােগে আলােচনা করাে।

'নুন' কবিতার শিল্পসার্থকতা আলােচনা করাে।

"নিম্নবিত্তের নােনা চোখের জলের দিনলিপি নয়, জয় গােস্বামীর ‘নুন’ কবিতাটি শেষপর্যন্ত হয়ে উঠেছে লবণাক্ত সমুদ্রের গর্জন।" -ব্যাখ্যা করাে।


“চলে যায় দিন আমাদের অসুখে ধারদেনাতে" -এই চলে যাওয়ার মধ্যে দিয়ে জীবনের কোন বিশেষ তাৎপর্যের দিকে কবি ইঙ্গিত করেছেন?

“মাঝে মাঝে চলেও না দিন" কবির এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিত আলােচনা করাে।

"আমরা তাে এতেই খুশি; বলাে আর অধিক কে চায়?" -কবির এই মন্তব্যের মর্মার্থ আলােচনা করাে।

“সে অনেক পরের কথা। টান দিই গঞ্জিকাতে।” -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।


“রাত্তিরে দু-ভাই মিলে টান দিই গঞ্জিকাতে/সব দিন হয় না বাজার; হলে হয় মাত্রাছাড়া" -উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে কোন জীবনসত্যের প্রকাশ ঘটেছে?

“কী হবে দুঃখ করে?কবির এই মন্তব্যের কারণ কী?

"করি তাে কার তাতে কী?" -মন্তব্যটির তাৎপর্য লেখাে।

“আমরা তাে অল্পে খুশি”—কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এ কথা বলেছেন? এই 'অল্পে খুশি' হওয়ার তাৎপর্য কী?