বাংলা নাটকের ইতিহাসে গিরিশচন্দ্র ঘােষের দান | বাংলা নাটকের ইতিহাসে দীনবন্ধু মিত্রের অবদান | বাংলা নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান | সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের কাব্যচর্চা

রবীন্দ্রোত্তর কবি হিসেবে সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের কাব্যচর্চার পরিচয়

সুভাষ মুখােপাধ্যায় (১৯১৯-২০০৩) প্রথম জীবনে সমাজ-পরিবর্তনের স্বপ্ন এবং সারাজীবন এক উদার মানবতাবাদকে তাঁর কবিতায় প্রতিষ্ঠা করেছেন।


সুভাষ মুখােপাধ্যায় রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ পদাতিক (১৯৪০ খ্রি.)। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযােগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল- 'অগ্নিকোণ' (১৯৪৮ খ্রি.), 'চিরকুট' (১৯৫০ খ্রি.), 'ফুল ফুটুক' (১৯৫৭ খ্রি.), 'একটু পা চালিয়ে ভাই’, ‘যতদূরেই যাই' (১৯৬২ খ্রি.), 'কাল মধুমাস' (১৯৬৬ খ্রি.), 'ছেলে গেছে বনে' (১৯৭২ খ্রি.), 'যা রে কাগজের নৌকা' (১৯৮৯ খ্রি.)। সাম্রাজ্যবাদী শােষণের সামনে বিপ্লবের স্বপ্নে আন্দোলিত কবি হাতে হ্রস্ব জীবনের জরিপের ফিতে নিয়ে চেয়েছেন শৃঙ্খল ভাঙতে। 'ফুল ফুটুক'-এর কবিতাগুলােতে এর সঙ্গেই যুক্ত হল এক শিল্পিত স্বভাব। এখান থেকে 'যত দূরেই যাই', 'কাল মধুমাস', ছেলে গেছে বনে প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে আবার দেখা যায় কবি আদর্শের যান্ত্রিকতা অপেক্ষা অনেক বেশি মানবতার সন্ধানী। পুরােনাে বিশ্বাস, পুরােনাে সম্পর্কের উদ্দেশে প্রশ্ন করতেও তাঁর বাধে না—“পুরনাে ভিতগুলাে যখন বালির মত ভাঙছে/আমরা ভাইবন্ধুরা/ঠিক তখনই/ভেঙে টুকরাে টুকরাে হচ্ছি।” এভাবেই শুদ্ধতার সন্ধানে নিজেকে এবং নিজের কবিতাকে ভাঙতে ভাঙতে পথ চলেন কবি সুভাষ মুখােপাধ্যায়।


কবিতার ভাষার সঙ্গে মুখের ভাষার মেলবন্ধন করে বহু কবিতায় তিনি মৌখিক বাচনভঙ্গিকে অনায়াসে শিল্পসম্মতভাবে ব্যবহার করেছেন। ছন্দবদ্ধ কবিতায় যেমন, তেমনই গদ্যকবিতার ক্ষেত্রেও কবি অতুলনীয় দক্ষতা দেখিয়েছেন।


বাংলা নাট্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান

বিষয়বস্তুর ওপর নির্ভর করে মধুসূদনের নাটকগুলিকে মােট তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় :

  • পৌরাণিক নাটক: শর্মিষ্ঠা (১৮৫৯), পদ্মাবতী (১৮৬০);

  • ঐতিহাসিক নাটক: 'কৃষ্ণকুমারী’ (১৮৬১);

  • প্রহসন: 'একেই কি বলে সভ্যতা?' (১৮৬০), 'বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ' (১৮৬০)।


শর্মিষ্ঠা: মধুসূদনের প্রথম নাটক 'শর্মিষ্ঠা' মহাভারতের আদিপর্বের যযাতি, শর্মিষ্ঠা ও দেবযানীর কাহিনি অবলম্বনে লেখা হলেও নাট্যরচনায় শেকসপিয়রীয় রীতি অনুসৃত হয়েছে।


পদ্মাবতী: পদ্মাবতী নাটকে গ্রিক পুরাণের 'Apple of Discord' থেকে নেওয়া কাহিনিকাঠামােতে মধুসূদন ভারতীয় পুরাণের ছদ্মবেশ পরিয়েছেন। গ্রিক নাটকের জুনাে, ভেনাস, প্যালাস, প্যারিস এবং হেলেন মধুসূদনের রচনায় রূপান্তরিত হয়েছে যথাক্রমে শচী, রতি, মুরজা, ইন্দ্রনীল এবং পদ্মাবতী চরিত্রে। উল্লেখ্য, ‘পদ্মাবতী’ নাটকের একটি চরিত্রের মুখেই মধুসূদন প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।


'কৃষ্ণকুমারী’: মধুসূদনের ঐতিহাসিক নাটক 'কৃষ্ণকুমারী’র কাহিনি-অংশ টডের লেখা 'Annals and Antiquities of Rajasthan' গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। জয়পুরের রাজা জগৎসিংহ এবং মানসিংহ উভয়েই উদয়পুরের রাজকন্যা 'কৃষ্ণকুমারী’কে বিবাহ করতে চাইলে মহাসংকটে পড়েন উদয়পুরের রাজা ভীমসিংহ। বিরুদ্ধ শক্তির আক্রমণ থেকে মেবারকে রক্ষা করার জন্য শেষ পর্যন্ত আত্মত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন রাজকন্যা কৃষ্ণকুমারী।


প্রহসন: 'একেই কি বলে সভ্যতা?'র মধ্যে তিনি সেকালের উচ্চশিক্ষিত কিন্তু উচ্ছঙ্খল নব্য যুবকদের স্বরূপ তুলে ধরেছেন; আর 'বুড় সালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসনটির মধ্যে ফুটে উঠেছে এক গ্রাম্য জমিদার ও ধর্মগুরুদের কদর্য চরিত্র। আজও নাটক হিসেবে এই প্রহসন দুটির উপযােগিতা এতটুকু ম্লান হয়নি।


বাংলা নাটকের ইতিহাসে দীনবন্ধু মিত্রের অবদান

বাংলা নাটকের ইতিহাসে অন্যতম সমাজ-সচেতন নাট্যরচয়িতা দীনবন্ধু মিত্রের নাটকগুলিকে প্রধানত তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায় :

  • সামাজিক নাটক: নীলদর্পণ’ (১৮৬০);

  • রোমান্টিক নাটক: 'নবীন তপস্বিনী (১৮৬৩), লীলাবতী (১৮৬৭), কমলে কামিনী (১৮৭৩);

  • প্রহসন/কৌতুকধর্মী নাটক: 'বিয়ে পাগলা বুড়াে’ (১৮৬৬), সধবার একাদশী (১৮৬৬), জামাই বারিক' (১৮৭২)।


'কেনচিৎ পথিকেনাভি প্রণীত’ ছদ্মনামে দীনবন্ধু মিত্রের প্রথম নাটক 'নীলদর্পণ’ এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। এই নাটকে গ্রামবাংলার প্রজাদের ওপর নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের চিত্র তিনি বাস্তবসম্মতভাবে তুলে ধরেছেন।


দীনবন্ধু মিত্রের 'নবীন তপস্বিনী', 'লীলাবতী' এবং 'কমলে কামিনী' প্রভৃতি নাটক ‘নীলদর্পণ’-এর তুলনায় ম্লান। এগুলির মধ্যে 'নবীন তপস্বিনী’ নাটকের জলধর চরিত্র কিংবা 'লীলাবতী' নাটকের নদের চাঁদ চরিত্র নিজস্বতায় বিশিষ্ট। 'সধবার একাদশী', 'বিয়ে পাগলা বুড়ো' এবং 'জামাই বারিক' নামে দীনবন্ধু তিনখানি প্রহসন রচনা করেন, যেখানে তাঁকে যথেষ্ট স্বচ্ছন্দ বলে মনে হয়। সধবার একাদশীতে নব্যবঙ্গ সম্প্রদায়ের উচ্ছঙ্খলতা ও ব্যভিচারকে বিদ্রুপ করা হয়েছে। 'বিয়ে পাগলা বুড়াে’তে ষাট বছরের এক বিপত্নীক বৃদ্ধ রাজীবের পুনর্বিবাহের উদ্যোগ এবং সেই কারণে যথেষ্ট নাকাল হওয়ার কৌতুকচিত্র দেখা যায়। 'জামাই বারিক' প্রহসনটিতে বড়ােলােকের বাড়িতে অলস জামাইয়ের অবস্থান এবং বিবাহিত কুলীন ব্রাহ্মণের জীবনে সতিনদের ঝগড়াজনিত বিভ্রাট চমৎকারভাবে পরিবেশিত হয়েছে। 'নীলদর্পণ’ নাটকের পাশাপাশি এই প্রহসনগুলির জন্যও দীনবন্ধু মিত্র আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন।


বাংলা নাটকের ইতিহাসে গিরিশচন্দ্র ঘােষের দান সম্বন্ধে আলােচনা

বাংলা নাটকের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘােষ, যিনি একইসঙ্গে ছিলেন অভিনেতা, নাট্যকার, নাট্যশিক্ষক, মঞ্চনির্দেশক এবং নাট্যসংগঠক। গিরিশচন্দ্রের নাটকগুলিকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে—


গীতিনাট্য: 'অকালবােধন', 'আগমনী', 'দোললীলা', 'মায়াতরু', 'মােহিনী প্রতিমা', 'আলাদিন', 'আবু হােসেন' প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযােগ্য গীতিনাট্য।


ঐতিহাসিক নাটক: গিরিশচন্দ্র রচিত ঐতিহাসিক নাটকগুলির মধ্যে ‘অশােক’, 'সিরাজউদ্দৌলা' (১৯০৬), ‘মীরকাশিম’ (১৯০৬) এবং 'ছত্রপতি শিবাজী' (১৯০৭) বিশেষ উল্লেখযােগ্য। এই নাটকগুলিতে পরাধীন ভারতবাসীর সমকালীন রাজনৈতিক চেতনা ও স্বদেশপ্রেম প্রকাশিত হলেও অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস এবং অতি নাটকীয়তা এগুলির ত্রুটি।


পৌরাণিক ও ভক্তিমূলক নাটক: পৌরাণিক ও ভক্তিমূলক নাটক রচনার ক্ষেত্রে গিরিশচন্দ্র বিপুল সাফল্য অর্জন করেছিলেন। 'রাবণবধ', 'সীতার বনবাস', 'অভিমন্যু বধ', 'রামের বনবাস', 'পাণ্ডবের অজ্ঞাতবাস', 'জনা' প্রভৃতি তাঁর বিখ্যাত পৌরাণিক নাটক। তিনি অবতার বা মহাপুরুষের জীবন অবলম্বনেও বেশ কয়েকটি ভক্তিমূলক নাটক রচনা করেছিলেন, যেমন -'চৈতন্যলীলা', 'বিল্বমঙ্গল', 'নিমাই সন্ন্যাস', 'বুদ্ধদেবচরিত’ প্রভৃতি।


সামাজিক নাটক: গিরিশচন্দ্র যে কয়েকটি পরিবার-আশ্রিত সামাজিক নাটক রচনা করেন, সেগুলির মধ্যে 'প্রফুল্ল', 'হারানিধি', 'বলিদান', 'শাস্তি কি শান্তি' বিশেষ উল্লেখযােগ্য।


প্রহসন: তার প্রহসনগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য কয়েকটি হল ‘ভােটমঙ্গল’, ‘হীরার ফুল’, ‘বেল্লিকবাজার’, ‘বড়দিনের বখশিস’, ‘য্যায়সা-কো-ত্যায়সা' প্রভৃতি।


বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা সম্পর্কে আলােচনা করাে।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের লেখকগােষ্ঠীর মধ্যে প্রধান‌দুজনের নাম উল্লেখ করে বাংলা গদ্যের ক্রমবিকাশে এঁদের কৃতিত্বের পরিচয় দাও।

বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে আলােচনা করাে।

বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'হুতােম প্যাঁচার নক্সা'র অবদান সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

বাংলা গদ্যসাহিত্যে প্যারীচাঁদ মিত্রের অবদান সম্পর্কে লেখাে।

বাংলা প্রবন্ধ-সাহিত্যের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

প্রমথ চৌধুরীর দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম লেখাে এবং তাঁর গদ্যরচনার বৈশিষ্ট্য বিচার করাে।


বাংলা গদ্যসাহিত্যে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা আখ্যানকাব্য ও মহাকাব্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'বীরাঙ্গনা কাব্য' ও 'ব্রজাঙ্গনা কাব্য’-এর পরিচয় দাও।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা কাব্যগুলির নাম লিখে তাঁর লেখা শ্রেষ্ঠ কাব্যটির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


আখ্যানকাব্যের সাধারণ পরিচয় দিয়ে উনিশ শতকের আখ্যানকাব্যগুলি উল্লেখ করাে।

মহাকাব্য ও তার বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে উনিশ শতকের মহাকাব্যগুলি উল্লেখ করাে।

গীতিকবিতা কাকে বলে? এই ধারায় বিহারীলাল চক্রবর্তীর অবদান আলােচনা করাে।

বাংলা গীতিকাব্যধারায় কবি বিহারীলালের কাব্যপ্রতিভার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে।


প্রবণতা অনুযায়ী রবীন্দ্রকাব্যের পর্ব-বিভাগ করে শেষ পর্বের কাব্যধারার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি সূত্রাকারে লেখাে।

প্রবণতা অনুসারে রবীন্দ্র কাব্যধারার পর্ব-বিভাগ করাে।

সূচনাপর্বের রবীন্দ্রকাব্যগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।

উন্মেষপর্বের রবীন্দ্রকাব্যগুলির পরিচয় দিয়ে এই পর্বের এরূপ নামকরণের যথার্থতা বিচার করাে।


‘ঐশ্বর্যপর্ব’-এর কাব্য আক্ষরিক অর্থেই ঐশ্বর্যময়- আলােচনা করাে।

রবীন্দ্রকাব্যের গীতাঞ্জলিপর্ব সম্পর্কে আলােচনা করাে।

বলাকাপর্ব ও গদ্যকবিতাপর্বের রবীন্দ্রকাব্য সম্পর্কে আলােচনা করাে।

কবি যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের কাব্যরচনার বৈশিষ্ট্য কী, সম্পর্কে আলােচনা করাে।


বাংলা কবিতার ইতিহাসে মােহিতলাল মজুমদারের স্থান নির্দেশ করাে।

কাজি নজরুল ইসলামের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও।

জীবনানন্দ দাশের দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম উল্লেখ করাে। তাঁর কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি কী?

রবীন্দ্রোত্তর কবি হিসেবে সুধীন্দ্রনাথ দত্তের কাব্যচর্চার পরিচয় দাও।