সূচনাপর্বের রবীন্দ্রকাব্য | প্রবণতা অনুসারে রবীন্দ্র কাব্যধারার পর্ব-বিভাগ | শেষ পর্বের কাব্যধারার প্রধান বৈশিষ্ট্য

প্রবণতা অনুযায়ী রবীন্দ্রকাব্যের পর্ব-বিভাগ করে শেষ পর্বের কাব্যধারার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি সূত্রাকারে লেখাে।

রবীন্দ্রকাব্যের পর্ব-বিভাগ: বিপুল বৈচিত্র্যময় রবীন্দ্রকাব্যকে প্রবণতা অনুযায়ী নিম্নলিখিত আটটি ভাগে ভাগ করা যায়-


  • সূচনাপর্ব (১৮৭৫-১৮৮১ খ্রি.),

  • উন্মেষপর্ব (১৮৮২-১৮৮৬ খ্রি.),

  • ঐশ্বর্যপর্ব (১৮৮৬-১৮৯৬ খ্রি.),

  • অন্তর্বর্তীপর্ব (১৮৯৬-১৯১০ খ্রি.), 

  • গীতাঞ্জলিপর্ব বা অধ্যাত্মপর্ব (১৯১০-১৯১৫ খ্রি.),

  • বলাকাপর্ব (১৯১৬-১৯২৯খ্রি.), 

  • পুনশ্চপর্ব বা গদ্যকবিতাপর্ব (১৯২৯-১৯৩৬ খ্রি.),

  • শেষপর্ব বা অন্তিমপর্ব (১৯৩৬-১৯৪১ খ্রি.)।


শেষপর্বের কাব্যধারার বৈশিষ্ট্য: 'খাপছাড়া' (১৯৩৭) থেকে 'শেষ লেখা' (মৃত্যুর পর প্রকাশিত) পর্যন্ত পর্বটিকে বলা যেতে পারে রবীন্দ্রকাব্যের শেষপর্ব বা অন্তিমপর্ব (১৯৩৬-১৯৪১)। এ পর্বে তিনি 'খাপছাড়া', 'ছড়া ও ছবি', 'প্রহাসিনী' ইত্যাদি মজার কয়েকটি কাব্যগ্রন্থ লিখলেও 'শ্যামলী, 'পত্রপুট', 'সেঁজুতি', 'আকাশ প্রদীপ', 'নবজাতক', 'সানাই', ‘রােগশয্যায়’, 'জন্মদিনে' প্রভৃতি গ্রন্থগুলিই হল এই পর্বের উল্লেখযােগ্য রচনা। 


  • এই পর্বে রবীন্দ্রনাথ আর গদ্যকবিতা রচনা করেননি।

  • এই অন্তিম পর্বে তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন মুক্তক ছন্দ।

  • জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে জীবন, মৃত্যু ও বিশ্বজগৎ সম্প কবির প্রগাঢ় উপলব্ধির প্রকাশ লক্ষ করা যায় এই পর্বের বিভিন্ন কবিতায়।

  • এই পর্বের কাব্যের ভাষা প্রায় নিরাভরণ। সত্যদ্রষ্টা কবি জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর স্বরূপ সম্বন্ধে তার দৃঢ় প্রত্যয় ও সংশয়হীন উপলব্ধি এখানে প্রকাশ করেছেন।


প্রবণতা অনুসারে রবীন্দ্র কাব্যধারার পর্ব-বিভাগ

প্রবণতা অনুসারে রবীন্দ্রকাব্য নিম্নলিখিত ৮টি পর্বে বিভক্ত-


[1] সূচনাপর্ব (১৮৭৫-৮১ খ্রি.): এই পর্বের রচনাগুলি হল 'কবিকাহিনী', 'ভগ্নহূদয়', 'শৈশব-সংগীত' ইত্যাদি কাব্য। এগুলিতে বিহারীলাল চক্রবর্তী, অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ কবির প্রভাব লক্ষ করা যায় বলে কবি নিজেই এগুলিকে বলেছেন ‘কপিবুকের কবিতা'।


[2] উন্মেষপর্ব (১৮৮২-৮৬ খ্রি.): এই পর্বের 'সন্ধ্যাসংগীত', 'প্রভাতসংগীত', 'ছবি ও গান', 'কড়ি ও কোমল'—এই পর্বের এই কাব্যগ্রন্থগুলিতেই প্রথম খুঁজে পাওয়া যায় রবীন্দ্রকাব্যের বৈশিষ্ট্য।


[3] ঐশ্বর্য পর্ব (১৮৮৬-৯৬ খ্রি.): 'মানসী', 'সোনার তরী', 'চিত্রা', 'চৈতালি'। এই পর্বের কবিতাগুলির মধ্যে রবীন্দ্রনাথের কাব্য-দর্শনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 'জীবনদেবতা' তত্ত্বের সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়।


[4] অন্তর্বর্তীপর্ব (১৮৯৬-১৯১০ খ্রি.): 'কথা', 'কাহিনী', 'ক্ষণিকা', 'কল্পনা', 'নৈবেদ্য', 'খেয়া'। এই পর্বে প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতি কবি আকর্ষিত হয়েছেন।


[5] গীতাঞ্জলিপর্ব বা অধ্যাত্মপর্ব (১৯১০-১৫ খ্রি.): 'গীতাঞ্জলি', 'গীতিমাল্য', গীতালি'। এই পর্বে রবীন্দ্রনাথের নিজস্ব অধ্যাত্মচেতনার প্রকাশ ঘটেছে।


[6] বলাকাপর্ব (১৯১৬-২৯ খ্রি.): 'বলাকা', 'পলাতকা', 'পূরবী', 'পরিশেষ'। এই পর্বে মুক্ত ছন্দে কবির গতিতত্ত্ব ও যৌবনতত্ত্বের অপরূপ প্রকাশ ঘটেছে।


[7] পুনশ্চপর্ব বা গদ্যকবিতাপর্ব (১৯২৯-৩৬ খ্রি.): 'পুনশ্চ', 'শেষ সপ্তক', 'পত্রপুট', 'শ্যামলী'। এই পর্বটিকে মূলত গদ্যকবিতার পর্বই বলা যায়।


[8] শেষপর্ব বা অন্তিমপর্ব (১৯৩৬-৪১ খ্রি.): 'সেঁজুতি', 'আকাশ প্রদীপ', 'নবজাতক', 'সানাই', 'রােগশয্যায়', 'আরোগ্য', 'জন্মদিনে'। এই পর্বে জীবনসায়াহ্নে উপনীত কবির জীবন, মৃত্যু ও বিশ্বজগৎ সম্বন্ধীয় গভীর উপলব্ধি প্রকাশিত হয়েছে মুক্তক ছন্দের আঙ্গিকে।



সূচনাপর্বের রবীন্দ্রকাব্যগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলােচনা

সূচনাপর্বের রবীন্দ্রকাব্য: রবীন্দ্রনাথের যখন সাত আট বছর বয়স তখন থেকে তাঁর কবিতা লেখার সূত্রপাত। একেবারে প্রথম দিকের অমুদ্রিত রচনাগুলির কোনাে অস্তিত্ব আজ আর নেই। সুতরাং, সূচনাপর্বের (১৮৭৫-১৮৮১ খ্রি.) রবীন্দ্রকবিতার পরিচয় নিতে হবে তার মুদ্রিত রচনাবলি থেকেই।


প্রথম জীবনে রবীন্দ্রনাথ খণ্ড কবিতা এবং গাথাকাব্য দুই-ই রচনা করেছেন। 'হিন্দুমেলার উপহার', 'অভিলাষ' প্রভৃতি রচনার পাশাপাশি তিনি 'বনফুল' এবং 'কবিকাহিনী' নামে দুটি গাথাকাব্য রচনা করেন। 'বনফুল' পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত (১৮৭৫ খ্রি.) হলেও গ্রন্থাকারে প্রথম প্রকাশিত হয় 'কবিকাহিনী' (১৮৭৮ খ্রি.)। এই পর্বের অন্যান্য উল্লেখযােগ্য কাব্য হল ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী', ‘ভগ্নহৃদয়’ ও ‘শৈশব-সংগীত’ (১৮৮১ খ্রি.)। সূচনাপর্বের আখ্যানকাব্যগুলি ব্যর্থ প্রেমের আখ্যান, যে প্রেমের নায়ক একজন কবি। এই পর্বের গীতিকবিতাগুলিও রােমান্টিক, গীতিধর্মী এবং উচ্ছাসপূর্ণ। এইসব রচনায় বিহারীলাল চক্রবর্তী, অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী প্রমুখের প্রভাব লক্ষ করা যায়। পরিণত জীবনে রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই পর্বের রচনাগুলি সম্পর্কে কুণ্ঠা প্রকাশ করতেন। এগুলিকে তিনি বলতেন 'কপিবুকের কবিতা'।


উন্মেষপর্বের রবীন্দ্রকাব্যগুলির পরিচয় দিয়ে এই পর্বের এরূপ নামকরণের যথার্থতা বিচার

উন্মেষপর্বের রবীন্দ্রকাব্য: 'সন্ধ্যাসংগীত' (১৮৮২খ্রি.), 'প্রভাত সংগীত' (১৮৮৩ খ্রি.), 'ছবি ও গান' (১৮৮৪ খ্রি.), 'কড়ি ও কোমল' (১৮৮৮ খ্রি.)—এগুলিই হল উন্মেষপর্বের রবীন্দ্রকাব্য। অনুকরণ-অনুসরণের যুগ পেরিয়ে এসে কবি হিসেবে রবীন্দ্রনাথের নিজস্বতার প্রথম পরিচয় পাওয়া যায় এই পর্বেরই 'সন্ধ্যাসংগীত' কাব্যে। 'সন্ধ্যাসংগীত’-এর কবিতায় স্বকীয়তা দেখা দিল ঠিকই, কিন্তু একটা বিষন্নতার পরিমণ্ডল থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না কবি। এই কাব্যের কোনাে কোনাে কবিতায় কবির অকারণ দুঃখবিলাসের পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়- "আয় দুঃখ, আয় তুই/তাের তরে পেতেছি আসন"। এরপর 'প্রভাত সংগীত'-এর কবিতায় সেই প্রার্থিত মুক্তি ঘটল। এই কাব্যের ‘নিঝরের স্বপ্নভঙ্গ কবিতায় কবি তাঁর আনন্দময় চেতনাকে প্রকাশ করলেন এক অপূর্ব আবেগময় ভঙ্গিতে। এখান থেকেই প্রকৃতপক্ষে বিশ্বজগতের সঙ্গে মিলন উৎসুক, আনন্দবাদী রবীন্দ্রনাথের যাত্রা শুরু। রবীন্দ্রনাথ নিজেও সে বিষয়ে সচেতন ছিলেন। তিনি এই কবিতা আমার সমস্ত কাব্যের ভূমিকা বলে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়াও এই পর্বে প্রকাশিত হয় ছবি ও গান এবং কড়ি ও কোমল কাব্য। কড়ি ও কোমল কাব্যে প্রকাশ পেয়েছে নিবিড় ইন্দ্রিয়চেতনা, জীবনের প্রতি গভীর আসক্তি এবং বিষয়ের বৈচিত্র্য। এই কাব্যেই রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন—"মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে,/মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই"।


সম্বাদ প্রভাকর থেকে 'বঙ্গদর্শন' পর্যন্ত বাংলা সাময়িক পত্রের ইতিহাস সংক্ষেপে লেখাে।

সম্বাদ প্রভাকর সাময়িকপত্রের সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও গুরুত্ব লেখাে।

'বঙ্গদর্শন' পত্রিকার সংক্ষিপ্ত পরিচয় ও গুরুত্ব লেখাে।

বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে তত্ত্ববােধিনী পত্রিকার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে 'বিবিধার্থ সংগ্রহ' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা সংবাদ ও সাময়িকপত্রের ইতিহাসে পরিচয় পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'সবুজপত্র' পত্রিকার গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য আলােচনা করাে।

আধুনিক বাংলা সাহিত্যে 'কল্লোল' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।


সমালােচনা সাহিত্যধারার 'শনিবারের চিঠি' পত্রিকাটির গুরুত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা সাময়িকপত্রের ইতিহাসে 'ভারতী' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'সাধনা' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।

'প্রবাসী' পত্রিকার গুরুত্ব আলােচনা করাে।


বাংলা গদ্যের উদ্ভব ও ক্রমবিকাশে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা সম্পর্কে আলােচনা করাে।

ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের লেখকগােষ্ঠীর মধ্যে প্রধান‌দুজনের নাম উল্লেখ করে বাংলা গদ্যের ক্রমবিকাশে এঁদের কৃতিত্বের পরিচয় দাও।

বাংলা গদ্যের বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান সম্পর্কে আলােচনা করাে।

বাংলা প্রবন্ধসাহিত্যে বঙ্কিমচন্দ্রের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে 'হুতােম প্যাঁচার নক্সা'র অবদান সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

বাংলা গদ্যসাহিত্যে প্যারীচাঁদ মিত্রের অবদান সম্পর্কে লেখাে।

বাংলা প্রবন্ধ-সাহিত্যের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

প্রমথ চৌধুরীর দুটি গদ্যগ্রন্থের নাম লেখাে এবং তাঁর গদ্যরচনার বৈশিষ্ট্য বিচার করাে।


বাংলা গদ্যসাহিত্যে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব আলােচনা করাে।

বাংলা আখ্যানকাব্য ও মহাকাব্যসাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান সম্পর্কে সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'বীরাঙ্গনা কাব্য' ও 'ব্রজাঙ্গনা কাব্য’-এর পরিচয় দাও।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখা কাব্যগুলির নাম লিখে তাঁর লেখা শ্রেষ্ঠ কাব্যটির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলােচনা করাে।


আখ্যানকাব্যের সাধারণ পরিচয় দিয়ে উনিশ শতকের আখ্যানকাব্যগুলি উল্লেখ করাে।

মহাকাব্য ও তার বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে উনিশ শতকের মহাকাব্যগুলি উল্লেখ করাে।

গীতিকবিতা কাকে বলে? এই ধারায় বিহারীলাল চক্রবর্তীর অবদান আলােচনা করাে।

বাংলা গীতিকাব্যধারায় কবি বিহারীলালের কাব্যপ্রতিভার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখাে।