অর্থশাস্ত্রের সংজ্ঞা দাও। অর্থশাস্ত্রের বিষয়বস্তু ও প্রকৃতি (Nature) লেখাে।

অর্থশাস্ত্রের সংজ্ঞা

[1] অর্থ: 'অর্থ বলতে সাধারণত টাকা, সম্পদ ইত্যাদিকেই বােঝায়। আর 'শাস্ত্র শব্দের অর্থ হল বিদ্যা বা বিজ্ঞান। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে তাই অর্থশাস্ত্র হল সম্পদের শাস্ত্র বা বিদ্যা| কিন্তু কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্রে অর্থনীতির পরিবর্তে রাজনীতির আলােচনা করেছেন।


[2] কৌটিল্য-র মত: কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্রের শেষ অধ্যায়ে এর সংজ্ঞা দিয়ে বলেছেন一

“মনুষ্যনাং বৃত্তিরর্থঃ, মনুষ্যবতী ভূমিরিত্যথঃ।

তস্যাঃ পৃথিব্যা লাভ পালনােপায়ঃ শামৰ্থ শাস্ত্র মিতি।” (অর্থশাস্ত্র, XV-১)

এই উদ্ধৃতির অর্থ হল—মানুষের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উপায় অর্থ। অর্থই হল মানুষের ধারণকারী ভূমি বা পৃথিবী। যে শাস্ত্র এই পৃথিবীকে লাভ করা বা পালন করার উপায় শেখায়, তা হল অর্থশাস্ত্র।


[3] মতের ব্যাখ্যা: সাধারণ অর্থে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে অর্থকে বােঝানাে হলেও কৌটিল্যের মত বিশ্লেষণ করে বলা যায়, সেযুগে বিনিময়ের সর্বোত্তম মাধ্যম ছিল ভূমি। ভূমির ওপর নির্ভরশীল কৃষিই ছিল সেযুগের প্রধান অর্থনীতি। যে রাজার যত বেশি ভূমি ছিল, সেই রাজা তত বেশি শক্তিশালী ছিলেন। তাই ভূমিভিত্তিক রাজ্যজয়, রাজ্যরক্ষা ও রাজ্যশাসন বিষয়ক শাস্ত্রকে অর্থশাস্ত্র' হিসেবে আখ্যা দেওয়া সঠিক।


অর্থশাস্ত্রের বিষয়বস্তু


কৌটিল্য রচিত অর্থশাস্ত্রে বিভিন্ন বিষয় আলােচিত হয়েছে। বিষয়গুলি ১৫টি অধিকরণে বিভাজিত হয়ে আলােচিত হয়েছে। অর্থশাস্ত্রে রয়েছে ছ-হাজার শ্লোক।তন্ত্র' ও ‘আবাপ’ এই দুই মূল অংশে অর্থশাস্ত্রের বিষয়বস্তুগুলি বর্ণিত হয়েছে। এছাড়াও অর্থশাস্ত্রে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের পরামর্শ।


[1] ‘তন্ত্র’ অংশে আলোচিত বিষয়: 'তন্ত্র' অংশে রাজার বিনয়, বিদ্যাভ্যাস, শিক্ষালাভ, রাজ্য পরিচালনার পদ্ধতি, বিচারব্যবস্থা, অধ্যক্ষদের দায়িত্ব-কর্তব্য প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে।


[2] 'আবাপ' অংশে আলােচিত বিষয়: 'আবাপ অংশে আন্তঃরাজ্য সম্পর্ক, কূটনীতি বিষয়ক ছয়টি কৌশল, সপ্তাঙ্গবিশিষ্ট রাষ্ট্রের (রাজ্যের) নানা সংকট, যুদ্ধকৌশল, বিজিগীষু রাজার কর্তব্য প্রভৃতি বিষয় আলোচিত হয়েছে।


[3] বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ: কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্রে রাজার প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, যথা—রাজ্যশাসন, পালন, প্রজান্বার্থ রক্ষা, দণ্ডবিধি, কূটনীতি গ্রহণ, গুপ্তচর নিয়োগ, যুদ্ধপরিচালনা পদ্ধতি প্রভৃতি।


অর্থশাস্ত্রের প্রকৃতি


[1] ধর্মনিরপেক্ষ প্রশাসনিক তত্ব: অর্থশাস্ত্র হল ধর্মনিরপেক্ষ প্রশাসনিক তত্ত্ব। ধর্মনিরপেক্ষ প্রশাসন পরিচালনার শিক্ষা দেয় অর্থশাস্ত্র।


[2] রাষ্ট্রনীতিবিদ্যা: কৌটিল্য অর্থশাস্ত্রকে রাষ্ট্রনীতির সমার্থক বলে উল্লেখ করেছেন। রাজ্যশাসনের জন্য রাজার যেসমস্ত নিয়মনীতি অনুসরণ করা উচিত তা হল রাষ্ট্রনীতি। দেওয়ানি, ফৌজদারি ছাড়াও ব্যক্তিগত আইনাবলি অর্থশাস্ত্রে বিশদভাবে বর্ণিত রয়েছে।


[3] ভূমি সংরক্ষণবিদ্যা: অর্থশাস্ত্র হল ভূমিরূপী রাজ্যজয় ও তার সংরক্ষপবিদ্যা। এই গ্রন্থ থেকে রাজ্যরক্ষার নানা ধারণা মেলে। অধ্যাপক বি. এ. সালেতার, আর. পি. কাঙলে প্রমুখ মনে করেন অর্থশাস্ত্র হল -ভূমি সংরক্ষপবিদ্যা।


রােমান সাম্রাজ্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিষয়ে একটি তুলনামূলক আলােচনা করাে।


মােগল সম্রাট আকবর এবং অটোমান সম্রাট সুলেমানের কৃতিত্বের তুলনামূলক আলোচনা করাে।


মােগল ও অটোমান সাম্রাজ্যের স্থাপত্য ও ভাস্কর্য, চিত্রকলা, সংগীত, ভাষার বিকাশ এবং সাহিত্য বিষয়ের একটি তুলনামূলক আলােচনা করাে।


ভারতের মােগল সাম্রাজ্য এবং তুরস্কের অটোমান সাম্রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন সাদৃশ্যগুলি উল্লেখ করাে।


মােগল সাম্রাজ্য এবং অটোমান সাম্রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন পার্থক্য বা বৈসাদৃশ্যগুলি উল্লেখ করাে।


কৌটিল্য তার অর্থশাস্ত্রে রাজার প্রধান ও অন্যান্য কর্তব্য সম্বন্ধে যে সমস্ত পরামর্শ দিয়েছেন, সেগুলি সংক্ষেপে আলােচনা করাে।


অর্থশাস্ত্রে কৌটিল্য বর্ণিত রাষ্ট্রতত্ত্ব বা 'সপ্তাঙ্গ তত্ত্ব' আলােচনা করাে।