আদিম আফ্রিকায় প্রাপ্ত বিভিন্ন মানব প্রজাতির নিদর্শনের ধারণা দাও। আদিম আফ্রিকার বিভিন্ন জনগােষ্ঠীর সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।

আদিম আফ্রিকার মানব প্রজাতিসমূহ

আদিম মানব প্রজাতির উদ্ভবের ইতিহাস আজও রহস্যাবৃত। কবে মানুষের জন্ম হল বা সে কোথা থেকে এল—এই সমস্ত প্রশ্নের সদুত্তর আজও মেলেনি। তবে অধিকাংশ ঐতিহাসিকের ধারণায় আফ্রিকা মহাদেশ হল মানবজাতির সম্ভাব্য জন্মভূমি।


[1] মানবদেহ ও জীবাশ্মের নিদর্শন:


  • ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে কেনিয়াতে এক মানব প্রজাতির নিদর্শন মিলেছে। নৃবিজ্ঞানী ও প্রত্মতাত্ত্বিকগণ এর নাম দিয়েছেন কেনিয়াপিথেকাস ইউকেরি। অনুমান করা হয় ১ কোটি ১২ লক্ষবছর পূর্বে আফ্রিকায় এদের অস্তিত্ব ছিল।


  • দক্ষিণ আফ্রিকার রােডেশিয়াতে নিয়ানডারথাল মানবের চেয়ে আর-এক ধাপ উন্নত মানুষের মাথার খুলি ও জীবাশ্ম মিলেছে।


  • ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী এল. এস. বি. লিকি এবং তাঁর স্ত্রী মেরি লিকি উভয়ের প্রচেষ্টায় পূর্ব আফ্রিকার ওল্ডােওয়াই (ওল্ডুভাই) অঞ্চলে হােমিনিড-এর মাথার খুলির অংশবিশেষ মিলেছে।


[2] বিভিন্ন যুগের মানব প্রজাতি


  • প্রাগৈতিহাসিক যুগে: দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ধরনের জীবাশ্ম থেকে জানা গেছে প্রাগৈতিহাসিক পর্বে আফ্রিকায় হােমাে হাবিলিস এবং হােমাে ইরেক্টাস মানুষের অস্তিত্ব ছিল।


    • হােমাে হাবিলিস: লিকি দম্পতি এবং তাদের পুত্র কোনাথন-এর প্রচেষ্টায় এই মানব প্রজাতির ফসিল আবিষ্কৃত হয়।


    • হােমাে ইরেকটাস: হােমাে ইরেকটাস প্রজাতির মানব ছিল প্রথম দণ্ডায়মান মানুষ। ইন্দোনেশিয়ার জাভাতে প্রথম নিদর্শন মিলেছিল বলে এদের জাভা মানবও বলা হয়। আফ্রিকার চাদ, মরােক্কো, কেনিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে এই আদিম মানব প্রজাতির জীবাশা মিলেছে।


  • প্রায় ঐতিহাসিক যুগ: এই পর্বে উত্তর আফ্রিকাতে নিয়ানডারথাল ও রােডেশিয়ান মানুষের অস্তিত্ব ছিল। ধীরে ধীরে আফ্রিকায় অস্ট্রালােপিথেসিন অর্থাৎ "প্রায় মানুষ ও সিনানথ্রপাস অর্থাৎ “মানুষ”—এর আর্বিভাব ঘটে।


আদিম আফ্রিকার জনগােষ্ঠীসমূহ


আদিম আফ্রিকায় বিভিন্ন আদিম জনগােষ্ঠী বসবাস করত। আদিম আফ্রিকায় বিভিন্ন অংশে ককেশিয়ড, নিগ্রোইড, লিবিয়নি, পিগমােইড, বান্টু, বুশম্যান প্রভৃতি জনগােষ্ঠীর বসবাস ছিল।


[1] ককেশিয়ড: আদিম আফ্রিকার ককেশিয়ড জনগােষ্ঠীর বসবাস ছিল উত্তর-পূর্ব আফ্রিকা, নিরক্ষীয় আফ্রিকা ও মধ্য আফ্রিকায়। এইসব মানুষদের জীবিকা ছিল শিকার ও খাদ্য- সংগ্রহ। এরা প্রথমদিকে হ্রদ অঞ্চলে বসতি নির্মাণ করে। এরা উৎকৃষ্ট পাথরের হাতিয়ার ও মাটির পাত্র তৈরিতে দক্ষ ছিল।


[2] নিগ্রেইড: নিগ্রেইড জনগােষ্ঠীর বসবাস ছিল উত্তর-পূর্ব আফ্রিকা, পশ্চিম আফ্রিকা এবং নিরক্ষীয় আফ্রিকায়। এই জনগােষ্ঠীর মানুষেরাও মূলত শিকারি ও খাদ্যসংগ্রহকারী ছিল। পশ্চিম আফ্রিকায় এই জনগােষ্ঠীর সংখ্যা ছিল বেশি।


[3] লিবিয়ান: উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকাতেই মূলত লিবিয়ান জনগােষ্ঠীর বসবাস ছিল। লােবা' নামে এক গােত্রের নামানুসারে এই জনগােষ্ঠীর নাম হয় লিবিয়ান। প্রাচীন লিবিয়ানরা ছিল আধুনিক বারবারদের পূর্বপুরুষ।


[4] পিগমেইড: নিরক্ষীয় আফ্রিকা অঞ্চলেই মূলত পিগমােইডদের বসবাস ছিল। এরা ছিল মূলত পশুপালক।


[5] বান্টু: বান্টুরা ছিল মূলত নিগ্রোইডদেরই একটি শাখা। বান্টু ভাষায় কথা বলত বলে এদের নাম হয় বান্টু। এদের আদি বাসস্থান ছিল মধ্য আফ্রিকার উজানবেনু অঞ্চল।


[6] বুশম্যান: বুশম্যান জনগােষ্ঠীর আধিক্য ছিল মধ্য আফ্রিকা ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। এরাই প্রথম পশুপালন করতে শেখে।


মধ্য প্রস্তর যুগের মানব সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক বর্ণনা করাে। লুইস হেনরি মরগ্যানের মতানুযায়ী মানব-সমাজের ক্রমবিকাশের ধাপকে ব্যাখ্যা করাে।


নব্য প্রস্তর বা নতুন পাথরের যুগের মানবজীবনের নানা দিকগুলি উল্লেখ করাে।


নব্য প্রস্তর যুগের সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল? এ যুগের চাষবাস সম্পর্কে লেখাে।


প্রাচীন প্রস্তর ও নব্য প্রস্তর উভয় যুগের মানুষের জীবনযাত্রা প্রণালীর পার্থক্যগুলি উল্লেখ করাে। উভয় যুগের হাতিয়ারের পার্থক্যগুলি লেখাে।


তাম্র-প্রস্তর যুগ (Chalcolithic Age)-এর সংস্কৃতির পরিচয় দাও।


কীভাবে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আদিম মানুষ শিকারী খাদ্য সংগ্রাহক থেকে স্থায়ী বসবাসকারীতে পরিণত হয়?


আদিম আফ্রিকার সংস্কৃতি কীরূপ ছিল? এই সময়কালের আফ্রিকার পরিবর্তিত আবহাওয়ার ওপর আলােকপাত করাে।