প্রাচীন প্রস্তর ও নব্য প্রস্তর উভয় যুগের মানুষের জীবনযাত্রা প্রণালীর পার্থক্যগুলি উল্লেখ করাে। উভয় যুগের হাতিয়ারের পার্থক্যগুলি লেখাে।

প্রাচীন ও নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের জীবনযাত্রা প্রণালীর পার্থক্য


প্রাচীন প্রস্তর যুগ

  • হাতিয়ারগুলি ছিল অনুন্নত এবং অল্প কয়েক রকমের, যেমন—হাত কুঠার, চাঁচনি।

  • মানুষ ছিল খাদ্যসংগ্রাহক। গাছের ফলমূল সংগ্রহ এবং পশুশিকার ছিল খাদ্যের উৎস।

  • প্রথমদিকে মানুষ খােলা আকাশের নীচে বসবাস করত। প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভয় পেয়ে এরপর তারা গুহায় আশ্রয় নেয়। পাশাপাশি তারা গাছের ডাল-পালা, পশুর হাড়গােড় দিয়ে আচ্ছাদন বানিয়ে বসবাস শুরু করে।

  • প্রধানত পশুর চামড়া ও গাছের ছালকে বস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হত।

  • খাদ্যসংগ্রাহক হিসেবে মানুষকে খাদ্য জাগাড়ের জন্য এক জায়গা থেকে আর-এক জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হত।

  • সমাজে স্পষ্ট কোনাে শ্রমবিভাজন ছিল না।


নব্য প্রস্তর যুগ

  • এই যুগের হাতিয়ারগুলি ছিল মাজাঘষা করা ও ধারালাে, যেমন—পাথরের কুঠার, কাস্তে, নিড়ানি, বড়শি, বাটালি, ছুঁচ ও কুমােরের চাকা।

  • মানুষ হয়ে উঠল খাদ্য-উৎপাদক। চাষ ও পশুপালন হয়ে উঠল খাদ্যের প্রধান উৎস।

  • নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ গােষ্ঠীবদ্ধভাবে নদী বা জলাশয়ের ধারে বাসগৃহ নির্মাণ করতে শুরু করে। তাদের তৈরি বাসগৃহগুলি ছিল তিনধরনের, যথা (i) স্থল বসতি, (ii) হ্রদ বসতি, (iii) গুহা বসতি।

  • এ যুগে বয়নের সূত্রপাত ঘটে। মানুষ শন, পশম ও তুলাের কাপড় বুনতে শিখল।

  • চাষ ও পশুপালনের ফলে মানুষের জীবনে এল খাদ্য নিরাপত্তা। এর ফলে জনসংখ্যা বাড়ল, মানুষ ক্রমশ স্থায়ীভাবে এক জায়গায় বাস করতে শুরু করল।

  • এই যুগে কৃষির আবিষ্কার, মৃৎশিল্পের বিকাশ প্রভৃতি কারণে সমাজে শ্রমবিভাজন তৈরি হল|নারী ও পুরুষের কাজের ক্ষেত্রেও শ্রমবিভাজন বাড়ল। সমাজ আগের চেয়ে জটিল হয়ে উঠল।


প্রাচীন ও নব্য প্রস্তর যুগের মানুষের হাতিয়ারের পার্থক্য


প্রাচীন প্রস্তর যুগের হাতিয়ার

  • এই যুগের হাতিয়ার ছিল অনুন্নত।

  • এই যুগে একই ধরনের হাতিয়ার দিয়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হত। হাতিয়ারের সংখ্যা ও বৈচিত্র্য ছিল কম।

  • এই যুগের হাতিয়ারগুলি সাধারণভাবে ব্যবহার করা হত খাদ্যসংগ্রহ ও আত্মরক্ষার জন্য।

  • চাকা ব্যবহারের কোনো ধারণাই এ যুগে ছিল না।


নব্য প্রস্তর যুগের হাতিয়ার

  • হাতিয়ারগুলি ছিল আগের যুগের তুলনায় অনেক বেশি মাজাঘষা করা ও ধারালাে।

  • এই যুগে প্রত্যেক কাজের জন্য নির্দিষ্ট ধরনের হাতিয়ার তৈরি হয়েছিল। তাই হাতিয়ারের সংখ্যা ও বৈচিত্র্য ছিল বেশি।

  • এই যুগে শিকার ও আত্মরক্ষার পাশাপাশি চাষের উপযােগী ও অন্যান্য দ্রব্য উৎপাদনের জন্য হাতিয়ার তৈরি হয়েছিল।

  • এই যুগে চাকার ব্যবহার শুরু হয়।


সময়ের ধারায় নবজীবীয় পর্বভুক্ত নানা যুগের পরিচয় দাও।


পুরা প্রস্তর যুগের মানুষের জীবনের নানা দিকের ওপর আলােকপাত করাে।


মধ্য প্রস্তর যুগের মানব সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক বর্ণনা করাে। লুইস হেনরি মরগ্যানের মতানুযায়ী মানব-সমাজের ক্রমবিকাশের ধাপকে ব্যাখ্যা করাে।


নব্য প্রস্তর বা নতুন পাথরের যুগের মানবজীবনের নানা দিকগুলি উল্লেখ করাে।


নব্য প্রস্তর যুগের সমাজব্যবস্থা কেমন ছিল? এ যুগের চাষবাস সম্পর্কে লেখাে।


তাম্র-প্রস্তর যুগ (Chalcolithic Age)-এর সংস্কৃতির পরিচয় দাও।


কীভাবে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে আদিম মানুষ শিকারী খাদ্য সংগ্রাহক থেকে স্থায়ী বসবাসকারীতে পরিণত হয়?