তৃতীয় ও চতুর্থ ক্রুসেডের বিবরণ দাও।

তৃতীয় ক্রুসেড (১১৮৯-৯২ খ্রি.)

[1] প্রেক্ষাপট: সালাদিন হার্ডিনের যুদ্ধে (১১৮৭ খ্রি.) খ্রিস্টান বাহিনীকে পরাজিত করে জেরুজালেম পুনরুদ্ধার করে নেন। এই সংবাদ পেয়ে পােপ অষ্টম গ্রেগরি তৃতীয় ক্রুসেডের ডাক দেন। ফলে জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে শুরু হয় তৃতীয় ক্রুসেড যাত্রা।


[2] অংশগ্রহণকারীগণ: এই ক্রুসেডের খ্রিস্টান বাহিনীগুলি‌ ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী। এই ক্রুসেডের অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিলেন পবিত্র রােমান সম্রাট ও বিখ্যাত শাসক ফ্রেডেরিক বারবারােসা, লায়নহার্ট' নামে পরিচিত ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম রিচার্ড এবং ফ্রান্সের দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ।


[3] ক্রুসেডারদের অনৈক্য ও সমস্যা: তৃতীয় ক্রুসেড অংশগ্রহণকারী তিন খ্রিস্টান রাজার মধ্যে মতের মিল ছিল না। ফলে ফ্রেডেরিক বারবারোসা, ফিলিপ ও রিচার্ড স্বতন্ত্রভাবে ক্রুসেডে যােগ দেন। ১১৯১ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রিয়ার ডিউক লিওপােল্ড ক্রুসেড যাত্রা করেন। এই চরম অনৈক্যের সময় একটি দুর্ঘটনায় ফ্রেডেরিক প্রাণ হারান। ফলে তার বাহিনীর অধিকাংশই ইউরােপে ফিরে যায়। ফিলিপ ও রিচার্ডের বাহিনীগুলি একের পর এক সংক্রামক রােগে আক্রান্ত হয়।


[4] ফলাফল: এসব সত্ত্বেও, প্রধানত রিচার্ডের অসামান্য সাহস ও যােগ্যতা এবং অস্ট্রিয়ার ডিউক লিওপােল্ডের যুদ্ধে যােগ দানের ফলে প্যালেস্টাইনের অনেকখানি এলাকা ক্রুসেডারদের দখলে চলে আসে। শেষপর্যন্ত ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে সুলতান সালাদিনের সঙ্গে ক্রুসেডারদের চুক্তি হয় যে জেরুজালেম মুসলমানদের দখলে থাকলেও খ্রিস্টান তীর্থযাত্রীরা জেরুজালেমে তীর্থ করতে আসতে পারবে। কিন্তু জেরুজালেম দখল না হওয়ার দরুন নতুন ক্রুসেডের সম্ভাবনা থেকেই যায়।


চতুর্থ ক্রুসেড (১২০২-১২০৪ খ্রি.)


[1] প্রেক্ষাপট: তৃতীয় ক্রুসেড শেষ হলে পােপ তৃতীয় ইনােসেন্ট পুনরায় একটি ধর্মযুদ্ধের ডাক দেন। এই ধর্মযুদ্ধে ইউরােপীয় রাজন্যবর্গ নিশ্চেষ্ট থাকলেও শ্যাম্পেন, ভেনিস, ফ্ল্যান্ডাসের কিছু সামন্তপ্রভু ও বণিক সম্প্রদায় অংশগ্রহণ করে।


[2] ফলাফল


  • জেরুজালেমের পরিবর্তে কনস্ট্যান্টিনােপল দখল: বণিকরা জলপথ ধরে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় তারা ভুল পথ দেখিয়ে ধর্মযােদ্ধাদের মিশরের বদলে কনস্ট্যান্টিনােপলে নিয়ে আসে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার। কারণে ভেনিসীয় বণিকরা কনস্ট্যান্টিনােপলের জারা শহর ধবংসের জন্য ক্রুসেডারদের প্ররােচিত করে। পােপ তৃতীয় ইনােসেন্টের নির্দেশ অমান্য করে ক্রুসেডাররা খ্রিস্টান শহর জারার দখল নেয় (১২০২ খ্রি.)। ফলে ভেনিসীয় বণিকদের ষড়যন্ত্রে ধর্মযােদ্ধাদের পুণ্যভূমি উদ্ধারের স্বপ্ন অধরা থেকে যায়।


  • ধনরত্ন লুণ্ঠন: বণিকদের প্ররােচনায় ধর্মযােদ্ধারা জারা শহরকে প্রায় ধবংসস্ভূপে পরিণত করে। তারা প্রচুর ধনরত্ন লুণ্ঠন করে স্বদেশে ফিরে আসে।


আকবরের ‘সুল-ই-কুল' ধর্মাদর্শের প্রতীক হিসেবে দীন-ই-ইলাহির পরিচয় দাও।


মােগল সম্রাট আকবরের ‘সুল-ই-কুল’ নীতি গ্রহণের কারণগুলি লেখাে।


পােপতন্ত্রের বিকাশে গ্রেগরি দ্য গ্রেট বা প্রথম গ্রেগরির এবং চার্চের বিকাশে পােপ তৃতীয় ইনােসেন্ট-এর ভূমিকা লেখো।


ক্রুসেডের কারণগুলি আলােচনা করাে।

অথবা, ক্রুসেডের প্রেক্ষাপট (পটভূমি) বর্ণনা করাে।


ক্রুসেডের উদ্দেশ্যগুলি এবং ক্রুসেডের মধ্য দিয়ে কীভাবে পােপের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তা আলােচনা করাে।


ক্রুসেডের প্রেক্ষাপটে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের মধ্যেকার সম্পর্ক স্থাপনের গুরুত্ব আলােচনা করাে।


প্রথম ও দ্বিতীয় ক্রুসেডের বিবরণ দাও।


History সব প্রশ্ন উত্তর (একাদশ শ্রেণীর)