মধ্যযুগে ইউরােপে সামন্তপ্রভুদের প্রধান ক্ষমতা ও কার্যাবলি উল্লেখ করাে।

সূচনা: ইউরোপে খ্রিস্টীয় নবম শতকের পরবর্তীকালে সামন্ততন্ত্রের উত্থান ঘটতে থাকে। সামন্তপ্রভুরা তাদের নিজ নিজ সামন্ত এলাকার যাবতীয় ক্ষমতা ভােগ করতেন।


সামন্তপ্রভুদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি

সামন্তপ্রভুদের ক্ষমতা ও কার্যাবলি ছিল নিম্নরূপ一


[1] শাসনকার্য: বিভিন্ন স্তরের সামন্তপ্রভুরা ছিলেন তাদের নিজ নিজ অঞ্চলের প্রধান শাসক। তাঁরা দুর্গ নির্মাণ করে সেখান থেকে এলাকাটির শাসন পরিচালনা করতেন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতেন।


[2] বিচারকার্য: সামন্তপ্রভুরা তাদের অধীনস্থ অঞ্চলের প্রজাদের যাবতীয় অন্যায়-অবিচার, বিবাদ-বিসংবাদের বিচার করতেন। প্রজাদের বিচার করার উদ্দেশ্যে নিজ এলাকায় তিনি একটি বিচারালয় প্রতিষ্ঠা করতেন।


[3] সংস্কারকার্য: সামন্তপ্রভু তার অধীনস্থ এলাকার রাস্তাঘাট, খাল-সাঁকো প্রভৃতি নির্মাণ ও মেরামত করতেন। এ ছাড়া তিনি স্থানীয় এলাকায় বাজার বসাতেন, পশুচারণ ভূমি সৃষ্টি করতেন।


[4] কর আদায়: সামন্তপ্রভু নিজ এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে কর বা খাজনা আদায় করতেন। ভূমিকর, উৎপাদন কর, সম্পত্তি কর (টাইলে) সহ বিভিন্ন প্রকার কর তিনি আদায় করতেন| প্রভু প্রতি সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েকটি দিন তার খামার বাড়িতে বা খাস জমিতে তার অধীনস্থ কৃষককে কর্ভি বা বেগার শ্রমদানে বাধ্য করতেন। কৃষকদের চার্চকে 'টাইদ" নামে ধর্মকর দিতে হত।


[5] অধীনস্থ সামন্তের আশ্রয়: উধর্বতন সামন্তপ্রভু তাঁর অধীনস্থ বা অধস্তন সামন্তদের আশ্রয়দাতা এবং রক্ষাকর্তা হিসেবে কাজ করতেন। অধীনস্থ সামন্তের আকাল মৃত্যু হলে মৃতের নাবালক পুত্রের অভিভাবকত্বও উধর্বতন সামন্তপ্রভু গ্রহণ করতেন এবং তার জমিদারি দেখাশােনা করতেন।


[6] সেনা সরবরাহ: সামন্তপ্রভুরা বহিরাগত শব্দুর আক্রমণ থেকে নিজের এলাকাকে রক্ষার উদ্দেশ্যে তার উর্ধ্বতন সামন্তপ্রভু বা রাজাকে সৈন্য ও প্রয়ােজনীয় সামরিক সাহায্য দিতেন।


[7] জমিদারি বাজেয়াপ্ত: উত্তরাধিকারী না রেখে কোনাে সামন্তের মৃত্যু হলে উর্ধ্বতন সামন্তপ্রভু তার জমিদারি বাজেয়াপ্ত করে সেখানে নতুন জমিদার নিযুক্ত করতেন। তা ছাড়া কোনাে সামন্ত তাঁর জমিদারি চালাতে ব্যর্থ হলে বা প্রভুর বিরোধিতা করলে উ্ধ্বতন সামন্তপ্রভু সেই সামন্তের জমিদারি বাজেয়াপ্ত করতে পারতেন।


উপসংহার: সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের অগণিত কৃষক থেকে শুরু করে সম্রাট পর্যন্ত একটি ধারাবাহিক পিরামিডাকার ক্রমােচ্চ স্তর সৃষ্টি হয়েছিল। এই স্তরবিন্যাসে উধর্বতন সামন্তপ্রভুর ক্ষমতা প্রয়ােগের ভিত্তি ছিল তার প্রতি তার অধস্তন সামন্তের আনুগত্য প্রদর্শন।


প্রাচীন ভারতে বিভিন্ন যুগে প্রচলিত দাস (ক্রীতদাস) প্রথার পরিচয় দাও। মৌর্যযুগে ভারতে দাসপ্রথার কয়েকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।


প্রাচীন ভারতীয় ক্রীতদাসরা কী ধরনের অধিকার ও সহানুভূতি পাওয়ার অধিকারী ছিল? প্রাচীন ভারতীয় অর্থনীতিতে দাসপ্রথার কতটা ভূমিকা ছিল?


প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে ক্রীতদাস প্রথার বিরুদ্ধে কী ধরনের প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছিল? প্রাচীন ভারতীয় দাস কীভাবে দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারত?


সুলতানি যুগে ভারতে ক্রীতদাস প্রথার পরিচয় দাও। এ যুগে ভারতে ক্রীতদাস সৃষ্টির প্রক্রিয়া ও ক্রীতদাসদের অবস্থা উল্লেখ করাে।


ভারতে সুলতানি আমলে ক্রীতদাসরা কোন্ কোন্ কাজে নিযুক্ত হত? সুলতানি যুগের অর্থনীতিতে ক্রীতদাস প্রথার কতটা ভূমিকা ছিল?


সামন্ততন্ত্র বলতে কী বােঝায়? ইউরােপে কখন এবং কীভাবে সামন্ততন্ত্রের উত্থান ও বিকাশ ঘটেছিল?


ধ্রুপদি যুগের সামন্ততন্ত্রের উৎপত্তি সংক্রান্ত বিতর্কটি কী? মধ্যযুগের ইউরোপীয় সামন্ততন্ত্রের কয়টি ও কী কী যুগ লক্ষ করা যায়?